উপকূলীয় জেলা ভোলায় প্রমত্তা তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙনে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে ভেদুরিয়া ইউনিয়ন। এক মাসে ওই ইউনিয়নের চর ভেদুরিয়া ও মধ্য ভেদুরিয়া গ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ড এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বসতবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে দিশাহারা এসব মানুষ। অসহায়-মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এ ছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে ভেদুরিয়া গ্যাসফিল্ড, ভোলা টেক্সটাইল কলেজ, ব্যাংকেরহাট কলেজ, ভেদুরিয়া লঞ্চঘাটসহ বেশ কয়েকটি স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও মাদরাসা। স্থানীয়রা বলছেন, ভোলা জেলার অন্যতম প্রবেশপথ ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট। এখান থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে তেঁতুলিয়া নদীর তীব্র ভাঙন চলছে। ইতোমধ্যে নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ জনপদ। ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে অনেক পরিবার। এর মধ্যে এক মাসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে অন্তত অর্ধশতাধিক ঘর। ভাঙনের মুখে পড়ে ঘরবাড়ি নদীর পাড় থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছেন অনেকে। তারা বলছেন, দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তেঁতুলিয়ার ভাঙন চলছে। এতে প্রসার বাড়ছে তেঁতুলিয়া নদীর। আর দিন দিন ছোট হয়ে আসছে ভেদুরিয়া এলাকা। নদী সংলগ্ন রাস্তা, মসজিদ, বসতবিটা ও ফসলি জমি নদীতে বিলীনের পথে। এখানকার অসহায় মানুষগুলো হারিয়েছে তাদের বসতভিটা, আবাদি জমি। অনেক পরিবার সহায় সম্পত্তি হারিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে নদীর তীরবর্তী যে সব পরিবার বসবাস করছেন তাদের দিন কাটছে চরম আতঙ্কের মধ্যে। নদীভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। ভোলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তেঁতুলিয়া নদী ভাঙছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দ্বীপজেলা ভোলার চারদিকেই নদী। উত্তরে ইলিশা, পুবে মেঘনা, পশ্চিমে তেঁতুলিয়া এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। সহজেই যাতে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে এ জন্য জেলার চারপাশে ২৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে।
এ ছাড়া ভাঙন রোধে অধিকাংশ এলাকাতেই সিসি ব্লকবাঁধ দেওয়া হয়েছে। ভোলার ভেদুরিয়া এলাকায় ২.৫ কি. মি., শিবপুর ৪ কি.মি., গঙ্গাপুর ৫ কি.মি, সাচরায় দেড় কিলোমিটার অধিক ভাঙন কবলিত। এই এলাকাগুলোতে স্থায়ী ব্লকবাঁধ দেওয়া হলে দ্বীপজেলা অনেকটাই সুরক্ষিত হবে।