২২ নভেম্বর, ২০২০ ১৭:০১

বাবা-মার স্বপ্ন পূরণে সন্তানদের স্কুল প্রতিষ্ঠা, গভীর রাতে অ্যাম্বুলেন্স সেবা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

বাবা-মার স্বপ্ন পূরণে সন্তানদের স্কুল প্রতিষ্ঠা, গভীর রাতে অ্যাম্বুলেন্স সেবা

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার অজপাড়াগাঁ মড়হ। সেই গ্রামে গড়ে উঠেছে জাতীয় মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই গ্রামে রাত গভীরে অ্যাম্বুলেন্স সেবাও পাওয়া যায়। করোনাকালসহ বিভিন্ন সময়ে এলাকায় খাদ্য সহায়তাও দেওয়া হয়। প্রতি মাসে আয়োজন করা হয় বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির। গ্রামের মকছুদ-মমতাজ কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে এসব সেবাধর্মী কাজ চলছে।

ট্রাস্ট সূত্রে জানা গেছে, মড়হ গ্রামের বাসিন্দা মকছুদুর রহমান চৌধুরী ৫০ সালে মেট্রিক পাশ করেন। নাঙ্গলকোট সদরে লজিং থেকে লেখাপড়া করেন। টানাটানির সংসারে বেড়ে উঠেন। তিনি কর্মজীবনে তহশিলদারের চাকরি করতেন। পাঁচ ছেলে এক মেয়ের সবাইকে লেখা পড়া করান। সম্প্রতি মকছুদুর রহমান চৌধুরী ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম মারা গেছেন। 

তবে তাদের স্বপ্নকে মরতে দেননি সন্তানরা। মকছুদুর রহমান চৌধুরীর স্বপ্ন ছিলো গ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করে এলাকাকে আলোকিত করবেন। বিভিন্ন সময়ে বাঁশ কাঠ যোগাড় করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে উদ্যোগ নেন। কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় তিনি এগুতে পারেননি।

তবে তার জমানো অর্থ, ছেলে-মেয়ের সঞ্চয় ও শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় মড়হ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মকছুদ-মমতাজ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ। ট্রাস্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপশি এখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাত গভীরেও অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়া যাবে নামমাত্র ফি দিয়ে। এছাড়া করোনাকালসহ বিভিন্ন সময় এলাকায় খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়।

ওই গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষাবিদ এহতেশাম হায়দার চৌধুরী বলেন, মকছুদ-মমতাজ কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে সুন্দর অবকাঠামো ও পরিকল্পনা নিয়ে মকছুদ-মমতাজ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ যাত্রা করেছে। আশা করছি প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে এই এলাকা আলোকিত হবে।

ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বাবার স্বল্প বেতনের ছোট চাকরি ছিল। তা দিয়ে আমাদের বড় করে তুলেছেন। তার স্বপ্ন ছিলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার। আমরা ভাই-বোনেরা ও শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় মড়হ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মকছুদ -মমতাজ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ। 

তিনি আরও বলেন, আমরা গতানুগতিক ধারার বাইরে আন্তর্জাতিক মানের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাই। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন তার ক্লাসরুম, তার ওয়াশরুম পরিষ্কার রাখে। এখান থেকে যেন সে জীবন গড়ার শিক্ষা নিয়ে বের হয়। প্রতিষ্ঠানের ফিও স্থানীয় প্রতিষ্ঠান থেকে কম নেওয়া হবে। আমাদের ইচ্ছে, লেখাপড়ার মানেই শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাবে। তখন গ্রাম আর শহরের শিক্ষার মানের পার্থক্য থাকবে না।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর