১৫ জানুয়ারি, ২০২১ ২০:০৭

চাঁদপুরে খাল খননের নামে গাছ নিধন

চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরে খাল খননের নামে গাছ নিধন

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে রুমুর খাল খননের কাজ শুরু করেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১০/১২ দিন পূর্বে খাল খননের কাজ শুরু করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খননের নামে খালের দু’পাশের গাছপালা কেটে নিধন করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। খালের আশপাশের বাসিন্দাদের শত বছরের পুরনো গাছের সাথে তাল, খেজুর, আম ও বিভিন্ন ফলের গাছও কাটতে দেখা গেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খালের দু’পাশের গাছপালা কেটে সরিয়ে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের লোকজন মাইকিং করে জানিয়ে দিয়েছে। সারাদেশে সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নদী ও খাল খনন প্রকল্পের কাজ চলমান। 

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় দুটি খাল খননের কাজ পেয়েছে ঢাকার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন। ২০১৯ সালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পেলেও নানা জটিলতায় সময়মতো খনন কাজ শুরু করতে পারেনি। অতঃপর ২০২০ সালের  ডিসেম্বরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রুমুর খাল খননের কাজ শুরু করে। খালের দু’পাশে শত বছরের গাছ কেটে খাল খনন কার্যক্রম শুরু করলে স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দেয়। উপজেলা নির্বাহী অফিস বিষয়টি চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা নড়েচড়ে বসে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ৩টি কারণ উল্লেখ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। 

কারণগুলো হচ্ছে- প্রথমত এই কাজের সাথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সমন্বয়কারী হিসেবে রাখা। দ্বিতীয়ত খালের পাড়ে জঙ্গল পরিষ্কার করতে গিয়ে কোনো গাছ না কাটা। তৃতীয়ত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ ও প্রকল্পে কাজের বিস্তারিত উল্লেখ করে ৬টি সাইনবোর্ড সাঁটানো।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পার্টনার সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, শেখ হাসিনার উন্নয়ন নদী-খাল খনন, সেচ প্রকল্পের উন্নয়ন জমিতে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ এর অংশ হিসেবে আমরা এই প্রকল্পের কাজ পেয়েছি। কিন্তু করোনার কারণে আমরা সময়মতো কাজ শুরু করতে পারিনি। এখন জোড়ালো ভাবে কাজ চলছে। সাধারণ মানুষ এই খাল খননে আমাদেরকে সহযোগিতা করছে। এভাবে চললে আগামী জুন মাসের মধ্যে খাল খননের কাজ সমাপ্ত হবে। 

গাছ কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, ভেকু মেশিনের মাধ্যমে খাল খননের টেন্ডার পেয়েছি। গাছপালা না কাটলে ভেকু মেশিন দিয়ে কিভাবে কাজ করবো। আপাতত যেখানে গাছপালা নেই সেখানেই খনন কাজ করছি। একদিন কাজ বন্ধ রাখলেও ভেকু মেশিন ভাড়া আড়াই হাজার টাকা গুণতে হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে এলাকায় গাছ কাটার জন্য মাইকিং করার কথা স্বীকার করে বলেন, কে বা কারা মাইকিং করেছে তা তিনি জানেন না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই প্রকল্পের দ্বায়িত্বরত প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ৯ কিলোমিটার ৭শ’ ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই খালটি খননে ৬৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫৩ টাকার কাজটি ঢাকার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন পেয়েছে। খালটি প্রস্থ ১৪ ফুট, ৬৫ ফুট গভীরতায় খনন কাজ করতে হবে। তবে খনন কাজের নামে কোন গাছ কাটা যাবে না। আপাতত কাজটি বন্ধ থাকবে। ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে পরবর্তী কাজ শুরু হবে। এমনকি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরাত দিয়ে যাতে কেউ গাছ না কাটে। যদি এ রকম কিছু হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে গাছ কাটার অভিযোগে মামলা করা হবে বলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর