করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিনে খুব একটা প্রভাব পড়েনি পাবনায়। সকাল থেকে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকার কথা থাকলেও ঢাকা থেকে এসেছে যাত্রীবাহী বাস। স্বাভাবিক ভাবেই চলাচল করছে ইজি বাইক ও রিকশা।
সরেজমিনে, পাবনার বাস টার্মিনাল, বড় বাজার, লাইব্রেরী বাজার ও আব্দুল হামিদ রোড ঘুরে দেখা যায় নিত্য পণ্যের দোকান ছাড়াও অধিকাংশ দোকানই অর্ধেক খোলা। রাস্তায়, ফুটপাতে জটলা করে হকারের দোকানে চলছে কেনাবেচা। বাজারেও মানা হয়নি শারীরিক দূরত্ব।
ব্যবসায়ীরা বলেন, হঠাৎ লকডাউন ঘোষণায় তাদের প্রস্ততি নেই। বেচাকেনা না থাকলে ব্যবসার ক্ষতি হবে। দোকান বন্ধ রাখা সম্ভব না।
ইজিবাইকের চালকদের লকডাউনে গাড়ি চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। আব্দুল আলীম নামের একজন ইজিবাইক চালক বলেন, করোনা ভাইরাসের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে পেটের ভাত জোগাবে কে? গতবার তাও কোনরকম চাল, ডাল পেয়েছিলাম। এবার তা দেয়া হবে না শুনেছি, তাই রাস্তায় নামা ছাড়া উপায় নেই।
ব্যবসায়ী সমিতির নেতা হাফিজ উদ্দিন বাহার বলেন, ‘লকডাউন চাই না। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের যে কর্মচারী আছে তাদের দায় আর কতদিন তারা বহন করবে। কাজেই সরকার লকডাউন দিলে এই সমস্ত কর্মচারীদের বেতন সরকারকেই দিতে হবে।
জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, জনগণ করোনা পরিস্থিতির বিষয়টি গুরুত্ব না দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। আমরা প্রতিনিয়ত জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। জনগণ সতর্ক না হলে লকডাউন বাস্তবায়ন করা কঠিন।
পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান বলেন, এটা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ জনগণকে সচেতন করা যাচ্ছে না। আমরা প্রাথমিকভাবে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করা হবে।
পরে, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার শহরের বিভিন্ন দোকানে সরকারী নির্দেশনা মানার জন্য সতর্ক করেন।
এদিকে, লকডাউন ঘোষণার পর থেকে গত দুই দিনে রাজধানী ঢাকাসহ, অধিক সংক্রমিত এলাকা থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তাদের মাধ্যমে আগামী পাবনায় করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
পাবনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আবু জাফর বলেন, গত এক সপ্তাহে দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় পাবনার করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। সংক্রমণের হার ছিল শতকরা ২ ভাগ। তবে, আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, বাইরে থেকে আসা মানুষের মাধ্যমে সংক্রমিতের হার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বাইরে থেকে যারা আসছেন তারা যেন অন্তত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন। অযথা বাইরে ঘুরে সবার জন্য বিপদ ডেকে না আনার অনুরোধও জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন