ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে খুলনার উপকূলীয় কয়রা ও পাইকগাছার ৫টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এছাড়া দাকোপে ৯টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সেখানে জরুরি ভিত্তিতে মাটি ও জিও ব্যাগ দিয়ে মেরামত কাজ করা হচ্ছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে নদীতে স্বাভাবিকের তুলনায় জেয়ারের পানি বাড়তে থাকলে পাইকগাছার গড়ইখালির কুমখালি ও দেলুটি ইউনিয়নের চকরিবকরিতে বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। পরে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে সেখানে দিনভর বাঁধ মেরামতে অংশ নেয় সাধারণ মানুষ।
দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে জোয়ারের প্রবল স্রোতে ২০নং পোল্ডারের চকরিবকরি প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে বেশ কিছু এলাকা তলিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভাটার সময় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এলাকাবাসী ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত করেন। লস্কর ইউনিয়নের ১০/১২নং পোল্ডারের ভরেঙ্গা স্যুইচ গেট, বাইনতলা গেট, আলমতলা গেট, আলমতলা দক্ষিণ বিলের গেট জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য জোয়ারের পানি বৃদ্ধি হলেই বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকতে থাকে। বেড়িবাঁধে পানি প্রবেশ ঠেকাতে গড়ইখালি উত্তর কুমখালিতে মাটি ও জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধ উচু করা হয়েছে। এছাড়া লতা ইউনিয়নে পুটলাখালিতে মাটি দিয়ে বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ঝুকিপূর্ণ বাঁধে জরুরী মেরামত কাজ করা হয়েছে।
এদিকে জোয়ারের অতিরিক্ত চাপে কয়রা উপজেলা মহারাজপুর মঠবাড়ি, দক্ষিণ বেতকাশি আংটিহারা ও মাটিভাঙ্গা পয়েন্টে বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করেছে। বৈরি আবহাওয়ায় বাতাসের গতিবেগ ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধে চাপ বাড়ছে। মাইংকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হচ্ছে।
কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হোসেন জানান, একই সাথে ঘূর্ণিঝড়, পূর্নিমার প্রভাবে নদীতে জোয়ারের পানি দুই থেকে তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়ে কয়রার মহারাজপুর মঠবাড়ি, দক্ষিণ বেতকাশির আংটিহারা ও মাটিভাঙ্গা পয়েন্টে বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। জানা যায়, জোয়ারের অতিরিক্ত পানির চাপে দাকোপের কামিনীবাসিয়া, মোজামনগর, গৌর কাঠি, মৌখালি পিচের মাথা, পানখালি পুরাতন খেয়াঘাট, জাবেরের খেয়াঘাট ও খলিসা পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল