৯ জুন, ২০২১ ১৪:০৯

নালিতাবাড়ীতে জলাতঙ্ক নির্মূলে কুকুরকে টিকা

নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

নালিতাবাড়ীতে জলাতঙ্ক নির্মূলে কুকুরকে টিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় জাতীয় জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুকুরকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। গত পাঁচদিনে উপজেলায় ২ হাজার ৯৯৯ কুকুরকে টিকা দেওয়া হয়। ২০২২ সালের মধ্যে দেশ থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল কর্মসূচির অংশ হিসেবে এটা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচির আওতায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় গত ৪ জুন থেকে বুধবার (৮ জুন) এই পাঁচ দিনে পাঁচ হাজার কুকুরকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্ত টিকা প্রাপ্ত হয় ২ হাজার ৯৯৯ কুকুর। পৌরসভাসহ ১২টি ইউনিয়নে ১৩৭ জন লোক টিম আকারে কুকুরকে এই টিকা দিয়েছেন। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবে ২৪ জন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। 

জলাতঙ্ক ভাইরাসজনিত মারাত্মক সংক্রামক রোগ। মূলত কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে এ রোগ ছড়ায়। এই রোগকে হাইড্রোফোবিয়া বা পাগলা রোগও বলা হয়। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি পানি দেখলেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রতিবছর জলাতঙ্ক রোগে বহু মানুষ মারা যায়। অতীতে বর্বর কায়দায় কুকুর নিধন করা হতো। এভাবে কুকুর নিধনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাশাপাশি প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা দূর করতে প্রাণী কল্যাণ আইন কার্যকর হওয়ায় আর এমন কোনো সুযোগও নেই। ফলে কুকুর নিয়ন্ত্রণ ও প্রাণীটি যাতে কোনোভাবেই জনস্বাস্থ্য ও জনদুর্ভোগের কারণ না হয়, তাই কুকুরকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে সহজেই এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়। তবে কুকুরকে জলাতঙ্ক রোগের টিকা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের বন্ধ্যা করার কার্যক্রমও জোরদার করতে হবে। কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এটা জরুরি। তা না হলে কুকুরের বংশ বৃদ্ধি ঘটতেই থাকবে, যা জলাতঙ্ক দূর করার টিকাদান কর্মসূচিকে ব্যাহত করতে পারে। 

একটি এলাকায় কুকুরের সংখ্যা বেশি হয়ে গেলে খাবারের অভাব ও ভারসাম্যের সংকট দেখা দিতে পারে। ফলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত প্রাণী কল্যাণ নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত করে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া। উন্নত বিশ্বে বেওয়ারিশ বা পথকুকুরদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সামাজিক ও নিরাপত্তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়। 

চলতি বছর সংসদে পাস হওয়া 'প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯' অনুযায়ী কোনো প্রাণি হত্যা করলে ছয় মাসের জেল অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে প্রাণীর প্রতি যেকোনো ধরনের নিষ্ঠুরতা মোকাবিলা করা সম্ভব। 

নালিতাবাড়ী পৌরসভার টিকাদান সুপারভাইজার হাবিবা আকতার সাবিনা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের অংশ হিসেবে কুকুরকে টিকা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত তা নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। কুকুরকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগের বিস্তার রোধ করা সম্ভব। 


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর