বরগুনার তালতলীতে অভিযোগের নোটিশের জবাব দেওয়ার আগেই শোরুম ম্যানেজারকে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে তালতলী উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। তবে পেটানোর কথা অস্বীকার করেছেন ভাইস-চেয়ারম্যান।
নির্যাতনের শিকার অটোরিকশা শোরুমের ম্যানেজার রফিকে তার পরিবার উদ্ধার করে আমতলি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেছে বলে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাত ১০ টার দিকে উপজেলার মালিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্যাতনের শিকার রফিকের পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিণ সদর রোডস্থ মালিপাড়া এলাকায় আল-মদিনা অটোরিকশা ও বোরাক কার বিক্রির শোরুম থেকে নাজমুল নামের এক ব্যক্তি একটি অটো-বোরাক কিস্তিতে কেনেন। কিছুদিন পরে ব্যাটারির সমস্যা দেখিয়ে উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাকের কাছে একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা পরিষদ কার্যালয় প্যাডে আল-মদিনা অটো সেন্টার শোরুমের ম্যানেজার রফিকুল ইসলামকে সব ধরনের কাগজপত্র নিয়ে ১০ জুন ব্যক্তিগত কার্যালয়ে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন ভাইস চেয়ারম্যান। নোটিশের জবাব দেওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভাইস-চেয়ারম্যান তার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য বাদল, রুহুল আমিন, রাকিবুল, মেহেদী হাসানসহ (সুমন কারী) ৭ থেকে ৮ জনকে ম্যানেজার রফিকুল ইসলামকে উঠিয়ে আনার জন্য শোরুমে পাঠান। ম্যানেজার রফিক কিছুক্ষণ পরে যাবার কথা বললে, কিশোর গ্যাংরা এই কথা ভাইস-চেয়ারম্যানকে জানায়। রাত ১০টার দিকে মোস্তাফিজুর কিশোর গ্যাং নিয়ে আল-মদিনা অটো সেন্টার শোরুমে চলে আসেন। ম্যানেজার রফিককে জিজ্ঞেস করেন, তুই আমার অফিসে যাসনি কেন? এ নিয়ে কথার কাটাকাটির এক পর্যায়ে কিশোর গ্যাং সদস্যরা ও ভাইস-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক নিজেই তাকে মারধর শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা ম্যানেজার রফিককে উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠান। অভিযোগ, এসময় শোরুমে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও নগদ ৮৬ হাজার টাকা নিয়ে যায় কিশোর গ্যাংরা।একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, প্রথমদিকে ৭ থেকে ৮ জন রফিককে উঠিয়ে নিয়ে আসার জন্য যায়। এতে রফিক না এলে পরে উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক নিজেই ২০ থেকে ২৫ জন কিশোর গ্যংয়ের সদস্য নিয়ে মদিনা অটোসেন্টার শোরুমে আসেন। এসেই উত্তেজিত হয়ে যান ভাইস চেয়ারম্যান। পরে ম্যানেজার রফিকের সঙ্গে কথার কাটাকাটি হয় কিছু বুঝে উঠার আগেই তিনি মারধর শুরু করেন। মারধরের বিষয়টি নিয়ে কিছু না করা জন্য হুমকিও দিয়ে যান।
কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বিএনপি সমর্থিত উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান হওয়ায় ছাত্রদল ও স্থানীয় শতাধিক কিশোরকে নিয়ে একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করেন। বিভিন্ন অভিযোগের নোটিশ দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হয় এই কিশোর গ্যাং দিয়ে।
মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, আমি ২৮ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছি।রফিককে ধরে নিয়ে আসার জন্য কর্মীদের পাঠানোর সত্যতা স্বীকার করলেও নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন তিনি।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) বলেন, এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ