২৪ জুন, ২০২১ ১৪:২৯

সরাইলে উদ্বোধনের আগেই কমিউনিটি ক্লিনিকের ছাদ চুইয়ে পড়ছে পানি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

সরাইলে উদ্বোধনের আগেই কমিউনিটি ক্লিনিকের ছাদ চুইয়ে পড়ছে পানি

ঝকঝকে ভবনটির উদ্বোধনের আগেই ছাদ চুইয়ে কক্ষে বৃষ্টির পানি পড়ে। বৃষ্টি এলে বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার হয়ে যায় সবকটি কক্ষ। নষ্ট হচ্ছে ওষুধসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র। ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের বরইছারা গ্রামে ৩নং ওয়ার্ডে পুনর্নির্মাণ করা হয় কমিউনিটি ক্লিনিক। নতুন ভবন নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে পুরাতন ভবনের ইটের খোয়া ও রাবিশ। ব্যবহার করা হচ্ছে ভিটি বালু। সিমেন্টও ব্যবহার হচ্ছে খুবই নিম্নমানের। ব্যবহারের জন্য বসানো হয়েছে পুরনো পাম্প। দেয়ালে বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সমস্যার প্রতিকার চেয়ে ওই ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মেহেরুন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত লিখিত অভিযোগ করেন।   

মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় উপজেলার বরইছারা গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু করা হয়। কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের আওতায় ওই ক্লিনিকের একতলা ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ২৯লাখ ৭৯হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে হুসাইন বিল্ডার নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ঠিকাদার ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করেন। এর মধ্যে ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ায় নতুন কক্ষ গুলো যেন পুরনো কক্ষে রূপ নিয়েছে। 

স্থানীয়রা জানায়, এ কাজে রড ও ঢালাইয়ে সিমেন্টের পরিমাণ অনেক কম দেওয়া হয়েছে। ছাদ ঢালাইয়ে ইটের গুঁড়া মিশ্রিত কংক্রিট ও নিম্নমানের বালু ব্যবহার করায় ছাদ চুইয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে। ঢালাই কাজ চলার সময় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা সাইটে আসেননি। 

ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মেহেরুন বলেন, কন্টাক্টর যখন আমাকে চাবি বুঝিয়ে দেয়। তখনই ছাদ দিয়ে পানি চুইয়ে পরছিল। তখন আমি ওনাকে বললাম ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। ওনি আমাকে বলে, এটা আপনার দেখার বিষয় না। এটা দেখবে ইঞ্জিনিয়ার। কাজ এত নিম্নমানের হয়েছে যা প্রকাশ করার মত নয়। বাথরুমের পাইপ এ কোন সাপোর্ট নেই। বৃষ্টি হলে সবকটি রুমে পানি পড়ে ওষুধসহ ভিজে যাচ্ছে আসবাবপত্র। সেঁচের জন্য পুরাতন মোটর বসিয়েছে। তখন আমি ভবন নির্মাণে ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর ২জুন ২০২১ লিখিত অভিযোগ করি।

তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হুসাইন বিল্ডারের সত্ত্বাধিকারী  হুসাইন মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছোটখাটো সমস্যা থাকতেই পারে। জেলা স্বাস্থ্য সহকারী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার শীল বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমি কন্টাক্টরকে বলছি। কন্টাক্টর বলছে নতুন করে ঢালাই করে দেবে। আর এটা খুব বেকায়দা জায়গা, আমি ঠিকমত সেখানে উপস্থিত থাকতে পারি নাই। সেজন্য কিছুটা সমস্যা হয়েছে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোমান মিয়া বলেন, জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর