উপকূলীয় হাজার হাজার জেলে পরিবারগুলো নানা সংকটের মধ্যে দিয়ে দিন পার করছে। করোনার প্রাদুর্ভাব, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাত ও সমুদ্রে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জেলেদের জীবন চলছে মহাসংকটে। কেউ দিন মজুরি দিয়ে কোনো রকমে বেঁচে আছেন। আবার কেউ ঋণের বেড়াজালে জড়িয়ে পড়ছে। চরম হতাশায় ভুগছে জেলে পরিবারের সদস্যরা।
মৎস্য অফিসের সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৩০৫ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। সমুদ্র সীমানায় ২০ মে থেকে ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
জেলে মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা আছে। যা জমা ছিল, তা সব শেষ। ধার দেনা করে চলছি। পরিবারের খাবার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছি।জেলে আব্দুল কুদ্দুস বলেন, মাছ ধরাই মোর পেশা। বাবায় মাছ ধরছে, মুইও মাছ ধরে সংসার চালাই। গত ১ বছর ধরে অনেক কষ্টে সংসার চালাই। মাছ ধরা নিষেধ থাকায় এ কষ্ট আরো বেড়ে গেল। সরকার যে চাল দেয় তাতে আমাদের কিছুই হয় না।
আরো কয়েকজন জেলে জানিয়েছেন, প্রকৃত জেলেরা সরকারের দেওয়া অনুদান ঠিকঠাক মতো পাচ্ছে না। জেলে না হলেও জেলে কার্ড পেয়েছে অনেকে। প্রকৃত জেলেরা যেন জেলে কার্ড পায়, সেদিকে নজর দেওয়ার জোর দাবি জানান ওইসব জেলেরা।
তবে তাদের আভিযোগ, ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারতীয় জেলে বাংলাদেশের জল সীমানায় ঢুকে মাছ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে মৎস্য বিভাগ একেবারেই চুপচাপ।
মৎস্য ব্যবসায়ী রহিম জানান, করোনার ঝামেলা, ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি, মাছ ধরা বন্ধ সব মিলিয়ে জীবনে চলছে ঝড়। কোনো রকমে বাইচ্চা আছি। কি করবো বুঝতে পারি না। ধারে আর ঋণেই চলছে সংসার।
কুয়াকাটা ও আলীপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, বর্তমানে সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। এসময় সরকার সামান্য প্রণোদনা দিচ্ছে, তাতে জেলের কিছুই হচ্ছে না। তবে তিনি জেলেদের প্রণোদনা বৃদ্ধির দাবি জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, প্রকৃত জেলেদের প্রথম ধাপে ১৮ হাজার ৩০৫ জন জেলেকে ৫৬ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেদের বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই