১ জুলাই, ২০২১ ১৭:৫৮

নালিতাবাড়ীতে পানির নিচে শতশত হেক্টর আউস ধান

নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

নালিতাবাড়ীতে পানির নিচে শতশত হেক্টর আউস ধান

নালিতাবাড়ীতে পানিতে ডুবে গেছে সড়ক।

টানা বর্ষণে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদী দিয়ে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন অঞ্চল। ঢলের পানির তোড়ে ভেসে যায় হাজারো পুকুরের মাছ। পানির নিচে রয়েছে শতশত হেক্টর আউস ধান ও আমনের বীজতলা।

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভোগাই নদীর হাতিপাগার, নিজপাড়া, গড়কান্দা, গোবিন্দনগর, চেল্লাখালী নদীর বালুঘাটা, সন্যাসীভটা অঞ্চলে নদীর তীর ধসে পানি প্রবাহিত হয় মাঠে। ঢলের পানির তোড়ে ভেসে যায় এক হাজার ১১৫টি পুকুরের মাছ। আউস ধান তিন শত হেক্টর ও আমন ধানের একশত হেক্টর আমন বীজতলা পানির নিচে রয়েছে।

ঢলের পানি বাড়িঘরে প্রবেশ করায় নষ্ট হচ্ছে কাঁচা-পাকা ঘর। মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দি। বিশেষ করে পৌরসভার গড়কান্দা, নালিতাবাড়ী বাজারের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ঘরে ঘরে প্রবেশ করেছে পানি। গোবিন্দনগর গ্রামের একটি অংশে প্রতিটি ঘরে ঢলের পানি প্রবেশ করায় কাল থেক চুলা জলে না। ঢলের এই পানিতে পানিবন্দি হয়ে মহাবিপদে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই!

যোগানিয়া ইউপি সদস্য আমান উল্লাহ বলেন, যোগানিয়া ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হলেও ইউপি চেয়ারম্যান গোবিন্দনগর গ্রামে বড় কোনো বরাদ্দ দেয়নি। শুধুমাত্র কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিক দিয়ে এখানে কিছু মাটি কাটা হয়। সেই মাটিও ঢলের পানিতে ধসে গিয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।

শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান দিপু বলেন, নিজপাড়া দিয়ে প্রতি বছর ঢলের পানি প্রবেশ করে ফসলের মাঠে, মানুষের বাড়িঘরে। ঢলের এই পানির তোড়ে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ডুবে গেছে রাস্তা। মানুষ হয়ে আছে পানিবন্দি। পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় প্রতিটি ঘরে পানি উঠেছে। মানুষ খুব কঠিন অবস্থায় রয়েছে। তাই নদীপাড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার দাবি জানান তিনি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মো. এমদাদুল হক বলেন, উপজেলায় এক হাজার ১১৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবীর বলেন, আউস ধান ও আমনের বীজতলা এখনো পানির নিচে রয়েছে। তিন দিনের বেশি পানির নিচে থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কৃষকদের প্রণোদনা চলমান রয়েছে। তাই ক্ষতি হলে পুষিয়ে নেওয়া যাবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোকছেদুর রহমান লেবু বলেন, আকস্মিক বন্যায় মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদীর বাঁধ মেরামতের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ক্ষতির তালিকা তৈরি করে আমরা উপরে পাঠাচ্ছি। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর