১৬ জুলাই, ২০২১ ১৮:১৪

দিনাজপুরের হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

দিনাজপুরের হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় কোরবানির হাটগুলোতে চাহিদার চেয়ে প্রচুর পরিমানে গরু-ছাগল বিক্রির জন্য উঠলেও গতবছরের চেয়ে ক্রেতা কম ছিল। তুলনামুলক দামও কম। তবে শুক্রবারের হাটগুলোতে দেখা যায় মধ্যম সাইজের গুরু বেশি বিক্রি হয়েছে। 

সবোর্চ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বৃহস্পতিবার থেকে কোরবানির স্থায়ী পশুরহাট বসানো হয়েছে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত পশু বেচাকেনা হবে। তবে এবারে মৌসুমী বা অস্থায়ী কোন পশুর হাট বসবে না। এরইমধ্যে জেলায় অনলাইনে ৪৪২৩টি কোরবানির পশু ৩১ কোটি ৬০ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এদিকে, গরু ব্যবসায়ীরা বলছেন গরুর দাম এবার কম আছে এবং ক্রেতারা বলছেন বড় পশুগুলোর দাম বেশি। বেচা-কেনা চললেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে সচেতনতার অভাব ছিল। শরীরের সাথে শরীর লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অনেক গরু ক্রেতা-বিক্রেতা। সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই এসব পশুর হাটগুলোতে। মাস্ক কারো মুখে, কারো মুখের নিচে আবার কারো ছিল না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সহ বিভিন্ন পরামর্শ হাট কর্তৃপক্ষ মাইকিং করলেও কেউ শুনছেন না তাদের কথা।  

শুক্রবার দিনাজপুরের বড় পশু হাটগুলোর মধ্যে আমবাড়ী ও খানপুর হাট বসে। এছাড়ও বিভিন্ন এলাকায় আরও পশুর হাট বসেছে। আমবাড়ী হাটে যাওয়া এক ক্রেতা আফসার আলী জানান, হাটে গরু-ছাগল প্রচুর, তুলনামুলক দাম কম। ক্রেতাও কম। অনেকে বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখে শুনে কোরবানির পশু কিনবেন। এ কারণে লোকসমাগম বেশি ছিল। তবে স্বাস্থ্যবিধি ছিল না। 

অপরদিকে সদরের খানপুর হাটে শিমুল জানায়, হাটে প্রচুর মানুষের আনাগোনা থাকলেও অনেকের মুখে মাস্ক নেই। স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। কর্তৃপক্ষের মাইকিং করছে। হাটে পশু বিক্রেতাদের মুখেও মাস্ক নেই। দাঁড়িয়ে আছেন গাদাগাদিভাবে। একই অবস্থা চিরিরবন্দরের বিন্নাকুড়িসহ বিভিন্ন গ্রামীন হাটেও। 

এদিকে দিনাজপুর জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আশিকা আকবর তৃষা সাংবাদিকদের জানান, জেলায় স্থায়ী পশুরহাট রয়েছে ১৮টি। প্রতিটি হাটে প্রাণিসম্পদ বিভাগের মেডিকেল টিম এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কাজ করছে প্রশাসন। তবে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে তিনি অনলাইনে কোরবানির পশু বেচাকেনা করার আহ্বান জানান।

ডাঃ আশিকা আকবর তৃষা আরও জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনলাইন “অনলাইন পশুরহাট, দিনাজপুর” এবং বিভিন্ন উপজেলার নাম দিয়ে “অনলাইন পশুরহাট” নামে ফেসবুক পেইজ খোলা হয়েছে। জেলার ১৩টি উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের উদ্যোগে ১৩টি ও জেলা পর্যায়ে একটিসহ ১৪টি অনলাইন হাট খোলা হয়েছে। খামার মালিকরা তাদের পশুর ছবিসহ ওজন ও দাম উল্লেখ করছেন এবং যোগাযোগে মোবাইল নম্বরও দেয়া হয়েছে। কোরবানির পশু ক্রেতারা এসব মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে পছন্দের পশুটি ক্রয় করতে পারবেন। যেহেতু প্রাণিসম্পদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত, সেহেতু ক্রেতা-বিক্রেতার প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। এরইমধ্যে অনলাইনে ৪৪২৩টি কোরবানির পশু ৩১ কোটি ৬০ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। 

উল্লেখ্য, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কোরবানির জন্য জেলার ৫৮ হাজার ৫৫টি খামারে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৩টি পশু প্রস্তুত হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ২৪ হাজার ২১৬টি গরু এবং ৭৪ হাজার ৫৬৭টি ছাগল ও ভেড়া। আর দিনাজপুর জেলায় এবারে কোরবানির চাহিদা রয়েছে ৯১ হাজার ১২৭টি গরু ও ৫৩ হাজার ১৪১টি ছাগল ও ভেড়া। জেলার চাহিদা মিটিয়ে সাড়ে ৫৪ হাজার গরু ও ছাগল দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা সম্ভব বলে জানায় জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।    


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর