৩০ আগস্ট, ২০২১ ২১:২৮

লিফট বিকল হওয়ায় সিঁড়ি বেয়ে অসুস্থ হয়ে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ

শেরপুর প্রতিনিধি

লিফট বিকল হওয়ায় সিঁড়ি বেয়ে অসুস্থ হয়ে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ

শেরপুর জেলা হাসপাতাল।

শেরপুর জেলা হাসপাতালের লিফট বিকল থাকায় পাঁচতলার গাইনি ওয়ার্ড থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নিচতলায় নেমে অসুস্থ হয়ে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তির পর বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য কয়েকবার সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করতে হয়। এতে অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

মৃত নারীর নাম রোজিনা (৩০)। তিনি গত শনিবার ওই হাসপাতালের পাঁচতলায় মাতৃত্ব সংক্রান্ত জটিলতায় গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। পরে রবিবার দুপুরে রোজিনা মারা যান। তিনি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী এলাকার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সালামের স্ত্রী।

মৃত রোজিনার স্বজনদের দাবি, শনিবার সকালে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা নিয়ে শেরপুর জেলা হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা রোজিনাকে। হাসপাতালের দুটো লিফট নষ্ট থাকায় ভর্তির পর তাকে হেঁটে সিঁড়ি দিয়ে পাঁচতলা গাইনি ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর কর্তব্যরত নার্স রোজিনার আলট্রাসনোগ্রাম ও রক্ত পরীক্ষার কথা বলেন। পরীক্ষার জন্য আবারো তাকে পাঁচতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামানো হয়। টেস্ট করা শেষে পুনরায় পাঁচতলায় সিঁড়ি বেয়ে ওঠার পর বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন রোজিনা।

রোজিনার স্বামী সালাম জানান, শনিবার সিঁড়ি বেয়ে পাঁচতলায় ওঠার পর আমার স্ত্রী বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। রবিবার সকালে নার্স আমাকে দুটো ইনজেকশন কিনে আনতে বলে। আমি নিচে থেকে ইনজেকশন কিনে নার্সকে দিলে তারা আমার স্ত্রীর করোনা রিপোর্ট ছাড়া কোনো সেবা দেওয়া হবে না বলে জানায়। পরে বাধ্য হয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে করোনা পরীক্ষার জন্য স্ত্রীকে অনেক কষ্টে সিঁড়ি দিয়ে নিচতলায় নামাই। করোনার স্যাম্পল দেওয়ার পরেই আমার স্ত্রীর অবস্থার অবনতি হয়। নিচ তলায় অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করেও নিচ তলায় অক্সিজেন দিতে পারি নাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার স্ত্রী নিচ তলাতেই মারা যান।

এ ঘটনায় কারো কোনো গাফিলতি ও অব্যবস্থাপনা থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নন্নী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান রিটন।

এদিকে, বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, রোজিনার মৃত্যুর পর র‌্যাপিড টেস্টে করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ এলেও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মৃতের তালিকায় রোজিনার নাম নেই।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনোওয়ারুর রউফ বলেন, লিফট নষ্ট থাকায় ভোগান্তি হয়েছে সত্য। প্রসূতির মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, ওই প্রসূতি নারীর চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো ত্রুটি ছিল কিনা, তা তদন্তের আগে কিছুই বলা যাবে না। আগামীকাল মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর