১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২০:১২

বিজয়নগরে মডেল মসজিদে ইমাম নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

বিজয়নগরে মডেল মসজিদে ইমাম নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পেশ ইমাম পদে এমপিওভুক্ত এক স্কুলশিক্ষককে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই পদের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শফিকুল ইসলাম নামে এক প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারসহ (ভূমি) সাতজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। শফিকুল ইসলাম বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের বড়পুকুর গ্রামের আমির আলীর ছেলে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের আইনজীবী ও বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ভূঁইয়া বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতের বিচারকের দায়িত্বে থাকা সারোয়ার আলম মামলাটি পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন। এ মামলায় পেশ ইমাম পদে নিয়োগ পাওয়া মো. মিসবাহ উদ্দিন, নিয়োগ কমিটির সভাপতি বিজয়নগরের ইউএনও, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাঠ কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, পাহাড়পুর ইউনিয়নের আউলিয়ানগর সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও ইউএনও’র প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, মিসবাহ বিজয়নগর উপজেলার মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন এমপিওভুক্ত শিক্ষক। এমপিওভুক্ত নীতিমালা ২০২১ অনুসারে এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক মডেল মসজিদের ইমাম নিয়োগ হতে পারেন না। 

মামলায় আরো বলা হয়, পেশ ইমাম পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে যেকোনো আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি তার ইমাম প্রশিক্ষণ ও ইমাম পদে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। পেশ ইমাম পদে নিয়োগ পাওয়া মিসবাহ উদ্দিনের এমন কোনো অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ নেই। বাছাইয়ের সময় তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার কথা। কিন্তু এরপরও তাকে লিখিত পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়।

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর চূড়ান্ত নির্বাচনেও মিসবাহকে পেশ ইমাম পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। নীতিমালা লঙ্ঘন করে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এছাড়া উপজেলা মডেল মসজিদ থেকে মহেশপুর উচ্চবিদ্যালয় প্রায় পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এতে নিয়োগ পাওয়া মিসবাহর পক্ষে জোহর ও আসরের নামাজ পড়ানো সম্ভব হবে না। পাশাপাশি প্রশিক্ষণের সময় তার পক্ষে দুই জায়গায় উপস্থিত থাকা সম্ভব হবে না।

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম ইয়াসির আরাফাত স্বাক্ষরিত পরীক্ষা ও নিয়োগের নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের গত ২৩ জুন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পেশ ইমাম পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় সাতজন উত্তীর্ণ হন। একই দিন বেলা ৩টায় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিসবাহ উদ্দিনকে পেশ ইমাম, আশরাফুল ইসলামকে মুয়াজ্জিন এবং নজরুল ইসলাম ও মাসুকুল ইসলামকে খাদেম পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাঠ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মিসবাহ উদ্দিন এমপিওভুক্ত স্কুলের শিক্ষক কি না, তা জানি না। নিয়োগ কমিটির সভাপতি ইউএনও। আমি কিছুই বলতে পারব না। আপনি ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম ইয়াসির আরাফাত বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মডেল মসজিদ থেকে তিনি সম্মানী পাবেন। নিয়ম অনুসারে একই ব্যক্তি দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নিতে পারেন না।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর