শিরোনাম
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৮:৫৬
সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ

বৃদ্ধ পিতা এখন কোথায় যাবে?

দিনাজপুর প্রতিনিধি

বৃদ্ধ পিতা এখন কোথায় যাবে?

অসহায় বৃদ্ধের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের

রাস্তায় পড়ে থাকা অসহায় অসুস্থ বয়োবৃদ্ধ তোফাজ্জল ইসলামের এখন জায়গা দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সার্জারি ওয়ার্ডের বারান্দায় কাতরানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অসহায় এই মানুষটির সন্তানেরা তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করছে ! এমতাবস্থায় বয়োবৃদ্ধ সেই পিতার পাশে দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে সন্তানদের কঠোর শাস্তির দাবি জানালো সেচ্ছাসেবী সংগঠন জাগ্রত সমাজ কল্যাণ সংস্থা। 

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের কর্ণধার আফসানা ইমু। 

তিনি বলেন, দিনাজপুর শহরের মাতাসাগর বড়দিঘী নিবাসী অসহায় বয়োবৃদ্ধ তোফাজ্জল চাচাকে নিয়ে আমরা কোথায় যাবো? তার ছেলেমেয়েরা তাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে এখন আর বাড়িতে সঙ্গী হিসেবে রাখতে চায় না। জীবনের শেষ বিকেলে আশ্রয়হীন এই অসহায় বৃদ্ধটির আশ্রয় কোথায় হবে তা জানিনা। তবে আমরা দাবি করছি, তাকেসহ দেশের এমন বয়োবৃদ্ধ মানুষদের যেন তাদের সন্তানেরা রাস্তায় ফেলে দিয়ে দায়িত্ব থেকে পালাতে না পারে সে জন্য প্রশাসনের কাছে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি করছি। 

তিনি আরো বলেন, অসুস্থ বৃদ্ধ এই পিতার সহায় সম্পত্তি সবকিছুই শহরের বিভিন্ন মহল্লায় বসবাসকারী ৪ সন্তানের নামে ভাগবাটোয়ারা করে লিখে দেয়। সন্তানেরা হচ্ছেন শামীম, শাহীন, জুয়েল ও তহমিনা আক্তার। চাচাকে দেখভালের জন্য মাতাসাগর এলাকায় কন্যা তহমিনাকে দোকানঘরসহ দেড় শতক জমি বেশি লিখে দেয়ায় ছেলেরা অসন্তুষ্ট হয়ে তোফাজ্জল চাচাকে আর দেখভাল করতে চায় না।

কিছুদিন আগে মেয়ের সাথে বসবাস করা চাচাকে তার মেয়ে তহমিনা বড়ভাইয়ের বাড়ির গেটে রেখে চলে যায়। কন্যা তহমিনাও পিতাকে আর দেখা শোনা করতে নারাজ। বৃদ্ধ হওয়ার সুযোগে ওই সন্তানেরা তাদের পিতার সমস্ত জমি নিজ নিজ নামে লিখে নিয়ে তাকে এখন রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। 

তিনি বলেন, সপ্তাহখানেক আগে রাস্তায় পড়ে থেকে মানুষের দেয়া খাবার খেয়ে রাস্তার পার্শ্বে বাঁচার চেষ্টা করেন। কিন্তু এরইমধ্যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরে আমরা তাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়েছি। কিন্তু হাসপাতাল কর্র্তপক্ষও এখন আর তাকে রাখতে চায় না।

সংবাদ সম্মেলনে আফসানা ইমু বলেন, আমরা তার ৪ সন্তানের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম কিন্তু তারাও বাড়িতে তুলতে চান না। আমাদের প্রশ্ন এই মানুষটি এখন কোথায় যাবে। কি খেয়ে বেঁচে থাকবে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি করছি সন্তানেরা যেন তার মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত তাকে দেখভাল করে এমন ব্যবস্থাই করবেন। সন্তানরা সম্মত না হলে তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে কঠোর শাস্তি প্রদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের। 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য নুর হোসেন, ফাহিম ফয়সাল, ফারজানা ও হারুন অর রশিদ হিমেল প্রমুখ।

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর