সারি সারি শত শত ঝাউ গাছের মাথা বাতাসে দোল খাচ্ছে। সৈকতে আছড়ে পড়ছে ছোট ছোট ঢেউ। আর গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে ট্রলার নিয়ে ছুটছে জেলেরা। কেউ বা ফিরে আসছে তীরে। আবার জেলে পরিবারের ছোট ছোট শিশুরা সৈকতে খেলা করছে নির্বিঘ্নে। এই হচ্ছে গঙ্গামতির সৈকত। যেন চোখ ফেরানো যায় না।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের দক্ষিণে সাগরের কোলঘেঁষা এক জনপদ। সূর্যোদয় দেখার জন্য এই স্পট আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। দল বেঁধে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। এ সৈকত কারও কাছে লাল কাঁকড়ার চর নামেও পরিচিত রয়েছে।

গঙ্গামতি এলাকার ইলিয়াস মোল্লা জানান, কুয়াকাটায় আসা শত শত পর্যটক সূর্যোদয় দেখার জন্য প্রতিদিনই গঙ্গামতি সৈকতে আসে। দিনভর তাদের হইচইয়ে মাতোয়ারা থাকছে সৈকত। তবে প্রতিটি ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে অব্যাহত বালুক্ষয়ে একে একে উপড়ে পড়ছে সারি সারি গাছ। কিন্তু এই সৈকত রক্ষায় কখনই কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

পর্যটক শহিদুল ইসলাম বলেন, বালুতটে লাল কাঁকড়ার লুকোচুরি দূর থেকে দেখলে মনে হয়েছে সৈকত জুড়ে লাল কার্পেট বিছিয়ে রেখেছে। গত দু’দিন আগে কুয়াকাটা এসে বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি। সূর্যোদয় দেখার সুযোগ আছে শুনেই গঙ্গামতির সৈকতে এসেছি।

আরেক পর্যটক তানিয়া বলেন, সূর্যোদয়ের মতো মনোলোভা দৃশ্য উপভোগ ছাড়াও সৈকতের বালুকা বেলায় লাল কাঁকড়ার নৃত্য ও প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য আমাকে এখানে টেনে এনেছে।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা টোয়াক’র সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার পূর্বদিকে গঙ্গামতি সৈকতের অবস্থান। এ স্পটটি বিরল মনোলোভা দৃশ্য সূর্যোদয় দেখার জন্য আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। পর্যটকরা প্রতিদিন প্রত্যুষে দল বেঁধে ছুটে যায়।

ধুলাসর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যান আব্দুল জলিল মাস্টার বলেন, এখানে গড়ে উঠেছে পর্যটক নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া পর্যটকদের সুবিধার্থে স্থাপন করা হয়েছে সুপেয় পানির ২টি টিউবওয়েল, ২টি বাথরুমসহ পিকনিক স্পট।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জেনের পরিদর্শক মো. হাচনাইন পারভেজ খালেক বলেন, পর্যটকরা যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশ গঙ্গামতির সৈকতে কাজ করছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই