৫ নভেম্বর, ২০২১ ১৬:২০

শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যার পর ডোবায় ফেলে দেয় স্বামী

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যার পর ডোবায় ফেলে দেয় স্বামী

আসামি তানজিল হাওলাদারকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেরমহল গ্রামে তালাকের কারণ জানতে চাওয়ায় স্বামীর হাতে নির্মম খুনের শিকার হয়েছে স্ত্রী। এ ঘটনায় গ্রেফতার স্বামী তানজিল হাওলাদারকে (২৬) বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে, গত ১৩ অক্টোবর বেরমহল গ্রামে স্বামীর বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে গৃহবধূ পারভীন আক্তারের (২৪) মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। সেদিন থেকেই পারভীনের স্বামী তানজিল হাওলাদার পলাতক ছিল। পরদিন ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। মামলা দায়েরের ১৮ দিন পর গত মঙ্গলবার পারভীন হত্যার মূল আসামি স্বামী তানজিল হাওলাদারকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

বৃহস্পতিবার আসামিকে ঝালকাঠিতে এনে আদালতে তোলা হয়। জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক ইমরানুর রহমান আসামি তানজিলকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় প্রেস ব্রিফিংয়ে ঝালকাঠি জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার অরিত সরকার জানান, ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেরমহল গ্রামের মৃত আবু হানিফ হাওলাদারের ছেলে তানজিল হাওলাদার। তিনি চলতি বছরের ১২ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টায় স্ত্রী পারভীন আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গোপন করে ঢাকায় পালিয়ে যান। পরিকল্পিতভাবে স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. শাহদাৎ হোসেনসহ ঝালকাঠির সিআইডি টিম ঢাকা সিআইডি টিমের সহায়তায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে মামলার ১৮ দিনের মধ্যে তানজিলকে কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় বলেও জানান তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঝালকাঠি সিআইডির উপ-পরিদর্শক মো. শাহদাৎ হোসেন জানান, আড়াই বছর আগে চাঁদপুর সদর উপজেলার জিন্নাত আলী মোল্লার মেয়ে পারভীন আক্তারের সঙ্গে তানজিল হাওলাদারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১ বছর ৮ মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত এক বছর ধরে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বিরোধ চলছিল পারভীনের।

জানা যায়, পারভীনের স্বামী তানজিল হাওলাদার এবং শাশুড়ি সুলতানা বেগম প্রায়ই তাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করতো এবং বাড়ি থেকে বের করে দিতো। গত ৯ অক্টোবর পারভীন শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় তার মায়ের কাছে চলে যায়। এরপর পারভীন জানতে পারেন যে, তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছেন।

এ ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য সে ঝালকাঠি এসে স্বামীর বাড়ির পাশের একটি বাড়িতে ওঠেন। এরপর ১৩ অক্টোবর রাতে পারভীনের ফোনে কল দিয়ে তাকে বাইরে যেতে বলেন তানজিল। সে সময় বাড়ির পাশের খালি জায়গায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পারভীনকে গলাটিপে হত্যা করে মরদেহ ডোবায় ফেলে পালিয়ে যায় তানজিল। 

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর