১৮ নভেম্বর, ২০২১ ১২:৪১

সরকারি চাল বিক্রির দায়ে চেয়ারম্যানের ভাইয়ের ডিলারশীপ বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

সরকারি চাল বিক্রির দায়ে চেয়ারম্যানের ভাইয়ের ডিলারশীপ বাতিল

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সরকারি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির দুঃস্থদের ভিডিজির চাল কালোবাজারে বিক্রির দায়ে কালেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হারেজ উদ্দিন আকন্দের ছোট ভাই সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার আমিনুল ইসলাম ঠান্ডুর ডিলারশীপ বাতিল করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ১৪ নভেম্বর ধুনট উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।    

জানা যায়, গত ২৫ অক্টোবর ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের কান্তনগর বাজারে সরকারি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় দুঃস্থদের মাঝে ভিডিজির চাল বিতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু সেই চাল দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ না করেই কালেরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার আমিনুল ইসলাম ঠান্ডু তার লোকজনকে দিয়ে ২৭ অক্টোবর ভোর ৪টার দিকে কান্তনগর বাজার থেকে ট্রাকে লোড করে সরকারি চাল কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল।

এমন সময় স্থানীয় লোকজন সরকারি জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়। পরবর্তীতে ৯৯৯ নম্বর থেকে বিষয়টি ধুনট থানায় অবগত করলে পুলিশ রাত ৪টার দিকে ধুনট উপজেলার কান্তনগর বাজার এলাকা থেকে ট্রাক ভর্তি ৩ হাজার ১৯০ কেজি চালসহ কাজিপুর উপজেলার পারুলকান্দি গ্রামের বিষা প্রামাণিকের ছেলে ট্রাক চালক শাহ আলমকে আটক করলেও অন্যরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় আটককৃত ট্রাক চালকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কালেরপাড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান হারেজ উদ্দিন আকন্দের ছোট ভাই ডিলার আমিনুল ইসলাম ঠান্ডুসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে ধুনট থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। ডিলার আমিনুল ইসলাম ঠান্ডু ঈশ্বরঘাট গ্রামের জালাল উদ্দিন আকন্দের ছেলে।

এ ব্যাপারে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত জানান, সরকারি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ না করেই ডিলার আমিনুল ইসলাম ঠান্ডু সেই চাল কালোবাজারের বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ১৯০ কেজি চালসহ ট্রাক জব্দ করে এবং চালককে গ্রেফতার করলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। 

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ডিলার আমিনুল ইসলামসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ায় আমিনুল ইসলামের ডিলারশীপ বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া একই ইউনিয়নের অপর ডিলার ফারহান ইসতিয়াক সনমকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। 

এছাড়া খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলনকৃত ওই ডিলারের অবিক্রীত ৭ হাজার ৯৫০ কেজি চাল সরকারি মূল্য অনুযায়ী বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিলার ফারহান ইসতিয়াক সনমকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ইউপি সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।   

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর