৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৬:২২

দেখা হলো না মেয়ে-নাতির সঙ্গে, পিঠা নিয়ে ফেরত গেলেন মা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

দেখা হলো না মেয়ে-নাতির সঙ্গে, পিঠা নিয়ে ফেরত গেলেন মা

বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বসবাস করেন আত্মীয়-স্বজনরা। তবে দেখা করার, গল্প করার ও একজন আরেকজনের বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছে হলেও কোনো উপায় নেই। কারণ মাঝখানে আছে কাঁটাতারের বেড়া। যে বেড়া বাংলাদেশ-ভারতকে বিভক্ত করেছে। 

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ৬ নম্বর ভাতুড়িয়া ইউনিয়নের মাকড়হাট ক্যাম্পের ৩৪৬ পিলার সংলগ্ন টেংরিয়া গোবিন্দপুর গ্রামের কুলিক নদীর পারে ঐতিহ্যবাহী পাথরকালী মেলা উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে যুগ যুগ ধরে দুই বাংলার হাজারো মানুষ স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হন। 
পাথরকালী পূজার পরে ওই এলাকায় বসে মেলা। এই মেলাকে ঘিরে একদিনের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। দুই বাংলার মানুষ আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেন। আত্মীয়-স্বজনদের জন্য নিয়ে আসা জিনিসপত্র কাঁটাতারের ওপর দিয়ে ছুড়ে দেন। 

গতকাল শুক্রবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ওই মিলনমেলা হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী বাঙালিরা স্বজনদের জন্য জিনিসপত্র নিয়ে কাঁটাতারের পাশাপাশি অবস্থান করেন। তবে তাদের সেখানে ভিড়তে দেওয়া হয়নি। সরেজমিনে দেখা যায়, এপারে প্রশাসনের তৎপরতা। কাঁটাতারের পাশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। কাঁটাতারের পাশে যেতে না পেয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন স্বজনরা। 

নিজের ভাইকে দেখতে আসা আলী আকবর বলেন, আপন জনদের দেখার জন্য এক বছর অপেক্ষা করে থাকি। নিজের ভাই থাকে পরিবারসহ ওপারে। গত বছরও দেখা করতে পারিনি। এবারে আশা ছিল ভাইয়ের মুখ দেখতে পারব। কিন্তু ভারতের প্রশাসন তা হতে দিল না। ওই দেশে বলে খুব ভাইরাস (করোনা) তাই আর দেখা হলো না। 

মেয়ের জন্য পিঠা নিয়ে আসা বৃদ্ধা সালেহা বেগম বলেন, এখন এই পিঠা কে খাবে? মেয়ে, জামাই, নাতি-নাতনির জন্য নিজের হাতে পিঠা বানিয়ে নিয়ে আসছি। কিন্তু পিঠা দেওয়া তো দূরের কথা, এক পলক দেখা করতেও পারলাম না। 

পূজা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নগেন কুমার পাল বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে মিলনমেলা করা সম্ভব হয়নি শুধু পূ্জা পালন করা হয়েছে। এ বিষয়ে ভাতুঁড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাজান সরকার বলেন, করোনার কারণে দুই বছর ধরে মিলনমেলা হয়নি। দুই বাংলার এই সম্পর্ক যেন যুগ যুগ থাকে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর