২২ জানুয়ারি, ২০২২ ১৭:০২
রংপুর

বোরো বীজতলার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘন কুয়াশা ও শীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

বোরো বীজতলার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘন কুয়াশা ও শীত

রংপুরে ঘন কুয়াশা ও শীত বোরো বীজতলায় জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বীজতলার বয়স ৪০ থেকে ৪৫ দিন হলে তা জমিতে রোপণ করা হয়। কিন্তু চারা রোপণের আগেই শীত ও কুয়াশা বীজতলার জন্য হুমকি হয়ে পড়েছে। ফলে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে।  অনেকে পলিথিন দিয়ে বীজ তলা ঢেকে তা রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।

কৃষি অফিস বলছে, বীজতলা পরিচর্যায় কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার বেশি বীজতলা তৈরি করা  হয়েছে।

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ঠাকুড়াদহ এলাকার চাষি আব্দুর সবুর জানান, ‌‘এক দোন (২৪ শতক) জমির জন্য চারা কিনতে দাম পড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বীজতলা নষ্ট হলে দাম আরও বেড়ে যাবে। তাই তিনি জমিতে রোপণ না করা পর্যন্ত বীজতলায় চারার পরিচর্যা অব্যাহত রাখছেন। আলু উত্তোলনের পর যারা ওই জমিতে বোরো আবাদ করবেন তারা ইতোমধ্যে চারা রক্ষায় শুকনো বীজতলা করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন। প্রায় একই ধরনের দুঃশ্চিন্তার কথা বললেন পীরগাছা উপজেলার কল্যানি ইউনিয়নের বোরো চাষি নজরুল ইসলাম বুলবুলসহ আরও কয়েকজন।’

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বোরো মৌসুমে চারা রোপণসহ বোরো ধানের বীজতলা তৈরির ধুম পড়েছে। অনেকে রবি ফসল হিসেবে চাষ করা সরিষা, আলু, গম ও তামাক উত্তোলনের পর ওই জমিতে বোরো আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সে জন্য কৃষকরা বীজতলা তৈরি করছেন। কিন্তু কুয়াশাসহ আবহাওয়ার বৈরি আচরণে তাদের চিন্তিত করে তুলেছে তাই বীজতলা রক্ষায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা।

কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী রাতের বেলা কেউ কেউ বীজতলা পানিতে ডুবিয়ে রাখছেন, পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন কেউ কেউ। আবার কেউবা ছত্রাকনাশক স্প্রে করে চারা রক্ষার চেষ্টা করছেন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলা নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় পাঁচ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো আবাদ করা হবে। এজন্য এক হেক্টর জমির বীজতলা দিয়ে ২০ হেক্টরে চারা লাগানো গেলেও কমপক্ষে ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা করা প্রয়োজন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মাহবুবার রহমান জানান, শীত ও কুয়াশা বীজতলার জন্য ক্ষতিকর। কাজেই শৈত্যপ্রবাহ থেকে বীজতলাকে রক্ষা করতে হবে। এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা, পানিতে ডুবিয়ে রাখা ও সালফারযুক্ত ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি বীজতলায় জিপসাম ও ইউরিয়া দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি বীজতলা করা হয়েছে।’

এদিকে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ থেকে রংপুর অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা নামা করছে। 


বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর