২৫ এপ্রিল, ২০২২ ১৮:০১

ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে মাদ্রাসা ছাত্রীর আত্মহত্যার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

বগুড়ার শেরপুরে ব্ল্যাক মেইলের শিকার হয়ে এক মাদ্রাসা ছাত্রী কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাতে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

মৃত ছাত্রীর নাম মোছা. আদুরী খাতুন (১৪)। সে উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দি গ্রামের আবু হানিফের মেয়ে। আদুরী স্থানীয় খামারকান্দি বালিকা দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণিতে পড়তো।

অভিযোগে জানা যায়, একই গ্রামের বাসিন্দা এন্তাজ আলীর ছেলে আবু মুছা (২০) ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করা হয়। একপর্যায়ে তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কও গড়ে তোলে আবু মুছা। পরে বিষয়টি উভয় পরিবারে জানাজানি হলে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয় ওই ‍যুবককে। এরপরও বিয়ের জন্য আদুরীকে গোপনে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে সে। কিন্তু আদুরীর পরিবার রাজি না থাকায় তাকে ভিন্নপথ বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেয় মুছা। এমনকি পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজার থেকে কীটনাশক এনে দেওয়া হয় তাকে।

পরবর্তী সময়ে চলতি মাসের ১৭ এপ্রিল রাত দশটার দিকে নিজ শয়নকক্ষে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে আদুরী। ঘটনাটি পরিবারের লোকজন জানতে পেরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঘটনার রাতেই বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাতে মারা যায় ওই মাদ্রাসা ছাত্রী।

নিহত আদুরীর মামা আব্দুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে তাকে উত্যক্ত করে আসছিল মুছা। প্রতিবাদ করায় তার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এমনকি মাদ্রাসার অনুষ্ঠানের আদুরীর একটি ছবি সংগ্রহ করে সে। পরে সেটি এডিটিং করে অশ্লীল ছবি বানিয়ে আদুরীকে দেখানো হয়। সেইসঙ্গে ওই বখাটের সঙ্গে সম্পর্ক না গড়লে ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। পাশাপাশি আত্মহত্যা করতে আদুরীকে প্ররোচণা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন মৃত মাদ্রাসা ছাত্রীর মামা আব্দুর রহিম।

জানতে চাইলে শেরপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, নিহতের পরিবারের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া উক্ত ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। সেইসঙ্গে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে শজিমেক হাসপাতাল মর্গে নিহতের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর