২৭ এপ্রিল, ২০২২ ২১:৪৩

নারী ফুটবলারকে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

নারী ফুটবলারকে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ মামলায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক নারী ফুটবলারকে (১৭) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ফয়সাল ফকির (৩৬) নামের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তবে ভুক্তভোগী নারী ফুটবলারের অভিযোগ, তিনি ধর্ষণের অভিযোগ দিলেও পুলিশ ধর্ষণচেষ্টার মামলা নিয়েছে। আর পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযোগ অনুযায়ী মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নারী ফুটবলার জানান, গত শুক্রবার উপবৃত্তির ফাইলে স্বাক্ষর দেওয়ার কথা বলে সরকারি শহীদ স্মৃতি কলেজে আমাকে ডেকে নেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল আলম ফকির ফয়সাল। পরে তাকে প্রশাসনিক ভবনের পেছনে নিয়ে মুখ চেপে গলায় চাকু ধরে ধর্ষণ করে। ধষর্ণের ভিডিও চিত্রও ধারণ করা হয়। এ কাজে সহযোগিতা করে আলামিন (৩৪) ও অজ্ঞাত আরও এক সহযোগী। ঘটনা কাউকে বললে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। 

নির্যাতিতার বাবা-মা বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাতেও আমাদের মেয়ে খুব ভালো। কিন্তু ফয়সাল আমাদের সর্বনাশ করে দিয়েছে। এখন লজ্জায় বাইরে যেতে পারি না। শনিবার থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দিলেও পুলিশ আসামি ধরছে না। এমনকি ধর্ষণের মামলা হয়ে গেছে ধর্ষণচেষ্টা। সব মিলিয়ে আমরা এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।’

জানতে চাইলে নান্দাইল মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ‘ভুক্তভোগীর বক্তব্য শুনেই ধর্ষণচেষ্টার মামলা নেওয়া হয়েছে। এতে ফয়সালসহ অজ্ঞাত দু’জনকে আসামি করা হয়। বুধবার দুপুরে ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ‍ভুক্তভোগী ওই কিশোরী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ফয়সাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমাকে ফোন করে বলে উপবৃত্তির জন্য স্বাক্ষর লাগবে। স্বাক্ষর না দিলে উপবৃত্তি আর পাব না। তাই সাথে সাথে কলেজে আসি। কলেজে ঢুঁকে ফয়সালকে কল দিলে সে প্রশাসনিক ভবনের পেছনে যেতে বলে। সেখানে যাওয়া মাত্রই আমার  মুখ চেপে ধরে মাটিতে ফেলে দিয়ে ঝাপটে ধরে। আমি চিৎকার করা শুরু করলে চাকু মেরে দেয়ার হুমকি দেয় এবং ধর্ষণ করে। এসময় আলামিন আমার পা ধরে রাখে। ভিডিও করে অজ্ঞাত আরেক ছেলে। প্রতি সপ্তাহে ফয়সাল তার সঙ্গে সময় কাটাতে বলে। অন্যথায় ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি হত্যার হুমকি দেয়। বিষয়টি কলেজের পিয়ন আব্দুর রহিম দেখলেও সহযোগিতা করেনি।’

তিনি আরও জানান, ‘এরপর বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি সবাইকে বলি। পুলিশ আমাদের সাথে অবিচার করেছে। তারা ধর্ষণ চেষ্টার মামলা নিয়েছে। ওসি স্যারকে সমস্ত কিছু খুলে বলার পরও কেন এমন হল বুঝতে পারছি না।’

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর