শিরোনাম
৩০ এপ্রিল, ২০২২ ১৪:৪৪

মধ্যরাতের কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

মধ্যরাতের কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ঠাকুরগাঁও

মধ্যরাতের কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁওয়ে মধ্যরাতে হঠাৎ কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন ফসল। এছাড় লণ্ডভণ্ড হয়েছে সদর, রানীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর, পীরগঞ্জ উপজেলার শতাধিক গ্রাম। একই সঙ্গে ঝড়ো বৃষ্টিতে আম, ধান, ভুট্টাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৮মিনিট থেকে শুরু হয় কালবৈশাখীর তাণ্ডব। প্রায় এক ঘণ্টার দমকা ঝড়ো হাওয়া ও শিলার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিতে জেলায় ফসলের ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়।

জেলা শহর ঘুরে দেখা যায়, ঘণ্টাব্যাপী এ ঝড়ে সড়কে সড়কে উপড়ে পড়ে আছে গাছ। এসব গাছ সরাতে রাতেই মাঠে নামে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সাধারণ মানুষ।

জানা যায়, বৃষ্টির পরিমাণ কম হলেও ঘূর্ণিঝড় বাতাসের বেগ বেশি ছিল। কোথাও কোথাও ভারী বজ্রপাতও হয়েছে। অনেকের বসবাসের একমাত্র স্থাপনার সবকিছু বাতাসে উড়ে গেছে। ঝড়ে ভেঙে পড়েছে কাঁচা-পাকা ঘর। উড়ে গেছে ঘরের চালা। উপড়ে পড়েছে হাজার হাজার গাছ। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। আর পাঁচ উপজেলায় ঝড়ে ঘরের দেয়ালচাপা পড়ে, গাছের ডাল পড়ে, প্রাচীরের ইট পড়া ছাড়াও বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। 

দুই শতাধিক গবাদি পশু আহত হওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু গরু-ছাগল এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে গিয়ে হারিয়ে গেছে। ধান, ভুট্টা ও কলার উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

রাণীশংকৈল উপজেলার রাতোর গ্রামের রমজান মিয়া বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে আমরা চারপাশে ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। ঘরের টিনের চালাগুলো উড়ে চলে গেছে। যেটুকু আবাদ করেছিলাম, সে স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গেল। এখন কীভাবে এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠব বুঝে উঠতে পারছি না।

সদর উপজেলার হাজিপাড়ার আসাদুল ইসলাম বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে গ্রামের মানুষের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি এবারে আমরাও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমাদের অনেকগুলো প্রাচীর ভেঙে পড়ে গেছে। অনেক ঘরের ওপরে গাছ পরে গেছে। কয়েক মিনিটের অপ্রত্যাশিত ঝড়ে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সরকারের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়া। 

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের আল মামুন বলেন, এমন ক্ষয়ক্ষতি হওয়া কালবৈশাখী ঝড় খুব কম দেখেছি। এর আগে একটা এলাকা বা কয়েকটা এলাকাকে কেন্দ্র করে হতো। এবারে পুরো জেলাজুড়ে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফরহাদ হোসেন জানান, শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় গাছ ভেঙে ও বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে গেছে। রাত ১২টার পর থেকে ঝড়ে বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে যাওয়ায় দুপুর দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ আছে। শহরে চারটি স্থানে বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। বহু গাছ ভেঙে পড়েছে। এগুলো সরানো হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও কৃষিসম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, ঝড়ের কারণে আম-লিচু বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। কৃষির সব মৌসুমি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর