৩০ এপ্রিল, ২০২২ ২০:৫১

বিরোধপূর্ণ জলাশয়ে মাছ ধরতে যাওয়ায় গাছে বেঁধে গণধোলাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বিরোধপূর্ণ জলাশয়ে মাছ ধরতে যাওয়ায় গাছে বেঁধে গণধোলাই

বিরোধপূর্ণ জলাশয়ে মাছ ধরতে যাওয়ায় গাছে বেঁধে গণধোলাই

বগুড়ার শেরপুরে বিরোধপূর্ণ জলাশয়ে জোরপূর্বক মাছ ধরতে যাওয়ায় জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া তারেক বিদ্যুৎকে গাছে বেঁধে গণধোলাই দিয়েছেন এলাকাবাসী।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ ছাড়া এই ঘটনায় নারীসহ আরও অন্তত পাঁচজন আহত হন। 

শুক্রবার উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে ওই গণধোলাই ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। শনিবার দুপুরে ওই ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, পৈর্তৃকসূত্রে পাওয়া উপজেলার শিবপুর গ্রামে একটি জলাশয় গত সত্তর বছর আগে থেকে ভোগদখল করে আসছেন একই গ্রামের ইলাম উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম। কিন্তু বেশকিছু দিন ধরে শিবপুর গ্রামের দলিলুর রহমান দুলাল ওই জলাশয়টি জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার জন্য পাঁয়তারা শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে একটি মামলাও দায়ের করা হয়। তবে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের শালিসি বৈঠকে সংঘর্ষ এড়াতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জলাশয়টি আগের ন্যায় রফিকুল ইসলাম ভোগদখল করবে মর্মে সমঝোতা করে দেওয়া হয়। উভয়পক্ষ সেটি মেনেও নেন। 

এমনকি সেই অনুযায়ী রফিকুল ইসলাম জলাশয়টি ভোগদখল করে আসছিলেন। কিন্তু শুক্রবার সকালের দিকে দুলালুর রহমান দুলাল সৈনিক লীগের নেতা জাকারিয়া তারেক ও বেশকিছু ভাড়াটে লোকজন নিয়ে ওই জলাশয়টিতে জোরপূর্বক মাছ ধরতে যান। একপর্যায়ে বিষয়টি জানতে পেরে তাদের বাধা দেন রফিকুল ইসলাম। পরে প্রতিপক্ষের ভাড়াটে লোকজন রফিকুল ইসলাম, তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম দুলু, বোন আঞ্জুমান আরা ও মেয়ে রিফা নানজিবাকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করেন।

এদিকে শহরের ভাড়াটে লোকজন এনে জোরপূর্বক জলাশয় দখলে নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এমনকি বিক্ষুব্ধ লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে সংগঠিত হয়ে শহরের ওসব লোকজনকে ধাওয়া দেন তারা। তখন বেশ কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও জেলা সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া তারেক বিদ্যুৎকে ধরে ফেলেন এবং গণধোলাই দেন। 

পরবর্তীতে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। 

বিষয়টি স্বীকার করে থানায় দায়ের করা আরেক অভিযোগের বাদী দুলালুর রহমান বলেন, আমাদের জলাশয়ে মার ধরতে গিয়েছিলাম। কিন্তু রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ নামে আমার এক আত্মীয়কে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে। এ ছাড়া আমরা তাদের কাউকে মারপিট করিনি। 

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, মারামারির খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তীতে উভয়পক্ষই থানায় পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগগুলো তদন্ত করে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
 
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর