১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২১:০৫

বাগেরহাটে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বহুগ্রাম প্লাবিত

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বহুগ্রাম প্লাবিত

বাগেরহাটে জলোচ্ছ্বাসে উপচে পড়া পানির চাপে সোমবার রাতে সদরের বারুইপাড়া ইউনিয়নের বাকপুরায় পানি উন্নয়ন বের্ডের রিং-বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বহুগ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবারও বাগেরহাটের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার দেড় ফুট উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। মোংলায় প্রায় ৪ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক বিভাগের ফেরিঘাটের পল্টুন। এতে করে মোংলা বন্দর এলাকা থেকে মোংলা শহরের সাথে ফেরী চলাচল দুপুর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। 

বাগেরহাটের ৩টি পৌর এলাকাসহ জেলার নিম্নাঞ্চলে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেক দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানি বেড়ে নদ-নদী উত্তাল হয়ে থাকায় কোস্টগার্ড মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করছে। জলোচ্ছ্বাসে এখনো সুন্দরবন তলিয়ে রয়েছে। গতকালও চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও ট্যুরিজম কেন্দ্রটিও প্রায় ৩ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। 

সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতি রক্ষায় জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। এই অবস্থায় বাঘ হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর প্রাণ রক্ষায় সার্বক্ষণিক দৃষ্টি রাখতে বন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার ভোর থেকে দিনভর চলে টানা বৃষ্টিপাত। এতে বেশি বিপাকে পড়েন দৈনন্দিন খেটে খাওয়া দিনমজুরেরা। দিনভর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত ১৪টি বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য খালাস মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানায় বন্দরের হারবার বিভাগ।

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, জলোচ্ছ্বাসে এখনো সুন্দরবন তলিয়ে রয়েছে। গতকালও চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও ট্যুরিজম কেন্দ্রটিও প্রায় ৩ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতি রক্ষায় জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। বন্যপ্রাণীর প্রাণ রক্ষায় সার্বক্ষণিক দৃষ্টি রাখতে বন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা রয়েছে। এখনো বৈরী আবহাওয়া কারণে কয়েক শত ফিশিং ট্রলার সুন্দরবনের বিভিন্ন ছোট খালে আশ্রয় নিয়ে আছে। আশ্রয়ে থাকা এসব ট্রলার ও জেলেদের নিরাপত্তার জন্য বনরক্ষীরা নিয়োজিত রয়েছে।

মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের সদর দপ্তরের স্টাফ অফিসার (অপারেশন্স) লেফটেনেন্ট কমান্ডার মেসবাহ উদ্দিন জানান, পানি বেড়ে নদ-নদী উত্তাল হয়ে থাকায় কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। এবার জেলেদের নিরাপদে সরিয়ে আনা সক্ষম হয়েছে। কোস্টগার্ড সতর্কতার সঙ্গে টহল অব্যাহত রেখেছেন। 

মোংলা আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ অমরেশ চন্দ্র ঢালী বলেন, পূর্ণিমার ভরা গোন চলায় ও নিম্নচাপের প্রভাবে বুধবারও সাগর এবং সুন্দরবন উপকূল কয়েক ফুটের অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়াসহ ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর