২৪ অক্টোবর, ২০২২ ১৬:৪৪

সিত্রাংয়ের প্রভাবে পাহাড়ে বৃষ্টি, ধসের শঙ্কা

প্রশাসনের সতর্কতা জারি

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

সিত্রাংয়ের প্রভাবে পাহাড়ে বৃষ্টি, ধসের শঙ্কা

রাঙামাটির শিমুলতলী এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন অনেকেই

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে পাহাড়ে। কখনো হালকা, কখনো মাঝারি ও আবার কখনো ভারী, থামছেই না এই বৃষ্টি। পাহাড়ে এমন মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দেখে শঙ্কার কালো মেঘ জমেছে পাহাড়বাসীর মনে। ঝড়ো হাওয়ার সাথে হতে পারে পাহাড় ধস। এমন শঙ্কায় আতঙ্কে পাহাড় ছাড়ছে অনেকেই।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসন মো. মিজানুর রহমান এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো থেকে মানুষকে নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সাথে মানুষকে সতর্ক করতে মাঠে নেমেছে জনপ্রতিনিধিরাও।

অন্যদিকে রাঙামাটি আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. হুমায়ন কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে এ বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে আরও কয়েকদিন। রয়েছে ভারী বৃষ্টির শঙ্কা। তাই সতর্ক থাকতে হবে স্থানীয়দের।

রাঙামাটি পৌরসভার তথ্য মতে, শুধু রাঙামাটি শহর এলাকায় এক লাখ ২৫ হাজারের অধিক মানুষ পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করে।

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো হচ্ছে-শহরের শিমুলতলী, নতুন পাড়া, মনতলা, রাঙ্গাপানি, এসপি অফিস সংলগ্ন এলাকা, শহীদ আবদুুল আলী একাডেমী সংলগ্ন ঢাল, পুলিশ লাইন সংলগ্ন ঢাল, স্বর্ণটিলা পাহাড়ের ঢাল, রাজমণিপাড়া পাহাড়ের ঢাল, রেডিও স্টেশনের পাশে শিমুলতলী পাহাড়ের ঢাল, লোকনাথ মন্দির পাহাড়ের ঢাল, আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ের ঢাল, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংলগ্ন পাহাড়ের ঢাল, চম্পক নগর পাহাড়ের ঢাল, পাবলিক হেলথ পাহাড়ের ঢাল, আমানতবাগ পাহাড়ের ঢাল ও মুজিবনগর পাহাড়ের ঢাল এলাকা। টানা বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক, রাঙামাটি আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কে ব্যাপক ধস দেখা দিয়েছে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, রাঙামাটি পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে ২৯টি আশ্রয় কেন্দ্র সব সময় প্রস্তুত। পাহাড়বাসীদের সতর্ক করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে সবচেয়ে বড় ধরনের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয় ২০১৭ সালে ১৩ জুন। সে সময় পাহাড় ধসের ঘটনায় প্রাণ হারায় ১২৮ জন।

জেলা প্রশাসনের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়া, রাঙামাটির ১০টি উপজেলা মিলে পাহাড় ধসের ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৮ হাজার ৫৫৮টি পরিবার। তার মধ্যে সম্পন্ন বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি হচ্ছে এক হাজার ২৩১টি। আর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৯ হাজার ৫৩৭টি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন, বিদ্যুৎ, শিল্প কারখানা, মৎস্য খামার, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি। 

এছাড়া ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমিও। যার পরিমাণ ১৮ হাজার ৯৯.৩১ হেক্টর। এছাড়া শহর এলাকায় ১৪৫টি স্থানে পাহাড় ধসে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিভিন্ন সড়ক। দেশের সব জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাঙামাটি। মাটির নিচে বিলীন হয়ে যায় ১৭টি পরিবার।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর