শিরোনাম
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৬:৩৮

বগুড়ার দুই আসনে ভোট পড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার দুই আসনে ভোট পড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ

বগুড়ার দু’টি আসনের উপ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হলেও ভোটার উপস্থিতি ছিল অনেক কম। সকল কেন্দ্রের প্রতিটি ভোট কক্ষে বেলা ১২টা পর্যন্ত গড়ে ১০০টি করে ভোট প্রদান করে ভোটাররা। 

ভোটাররা না আসায় বিভিন্ন কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা অলস সময় পার করে। ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ কম থাকায় ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা বলছেন, আনুমানিক ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। 

বুধবার সকাল ১১টায় বগুড়া-৬ (সদর) আসনের আওতায় ঠনঠনিয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি কক্ষে ৩০ থেকে ৩২টি করে ভোট পড়েছে। এ সময় ভোটারদের কোন লাইন দেখা যায়নি। দুই একজন করে আসছেন পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত দেখা গেলেও ভোটারদের উপস্থিতি ছিল হাতে গোনা।

এই কেন্দ্রে ভোট প্রদান করতে আসা মো. ছোটন জানান, সকাল থেকে ভিড় ছিল না। ভিড় না থাকায় কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে তিনিও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান করেন।

বগুড়ার সদরের জুবলি ইন্সটিটিউশনে পুরুষ কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ৪৮৬ জন। এর মধ্যে আধা ঘণ্টায় ভোট দিয়েছেন ৯৯ জন। নারী কেন্দ্রের ৩ হাজার ৬৫৪ ভোটারের মধ্যে সকাল ৯টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ১২০ জন। 

সকাল ১০টায় বগুড়া সদর উপজেলার ঘুনিয়াতলা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্রেও ছিল একই অবস্থা। স্কুলের বিরাট মাঠ থাকলেও কোন ভিড় দেখা যায়নি। বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রতিটি কক্ষে ১০ থেকে ১২টি করে ভোট পড়ে। 

এই কেন্দ্রে ভোট প্রদান করতে আসা উত্তর ভাটকান্দি গ্রামের ভোটার মোহাম্মদ আলী জানান, সকাল থেকে কেন্দ্রে কোন ভিড় দেখা যায়নি। তার এলাকার বেশ কয়েকজনকে ভোট প্রদানের জন্য বললেও কেউ ভোট দিতে আসেনি। পরে সে তার ভোটটি প্রদান করে।

বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ভোটার ৩ হাজার ৭ জন। এর মধ্যে সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৪৬টি।

সদরের সাবগ্রাম কুদরোতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মোট ভোটার ৩ হাজার ৯৭২ জন। এর মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৩০০ জন।

একই অবস্থা বিরাজ করে বগুড়া-৪ আসনে। এই আসনেও সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তেমন কোন ভিড় দেখা যায়নি। দুই একটি ভোট কেন্দ্রে ২০ থেকে ২২ জনের লাইন দেখা যায়। এছাড়া দির্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের ভোট প্রদান করতে দেখা যায়নি। ২ থেকে ৪ জন করে ভোটার বেশিরভাগ ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদান করে সারা বেলা। নারী ও পুরুষ উভয় বুথে ভিড় ছিল না।

নির্বাচন উপলক্ষে দুই আসনে ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটে ও ৩৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সদস্যরা আইনশৃখলা রক্ষায় কাজ করছেন। পাশাপাশি ১৪ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা টহল দিচ্ছে।

বগুড়ার নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান জানান, বেলা ২টা পর্যন্ত দু’টি আসনে আনুমানিক ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এরপর কিছু ভোট বাড়ে। ভোটগ্রহণের জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বগুড়ার দু’টি আসনেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। 

বগুড়া জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানানো হয়েছে, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১১২টি। আর ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭৭৭টি। এর মধ্যে অস্থায়ী কক্ষ ৪২টি। এই আসনে মোট প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ১১২ জন। সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৭৭৭ এবং পোলিং অফিসার ১ হাজার ৫৫৪ জন।

বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। ভোট কেন্দ্র হবে ১৪৩টি ও কক্ষ থাকবে ১ হাজার ১৭টি। এ আসনে ১৪৩ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ১ হাজার ১৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ২ হাজার ৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা ভোটগ্রহণ করেন।

দুটি আসনের নির্বাচনে প্রার্থীরা হলেন বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে নির্বাচনে ১৪ দলীয় মনোনীত প্রার্থী জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম রেজাউল করিম তানসেন (মশাল), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শাহীন মোস্তফা কামাল ফারুক (লাঙ্গল), জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ সরদার (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির তাজ উদ্দিন মন্ডল (ডাব) স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম (একতারা), মুশফিকুর রহমান কাজল (ট্রাক), কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল (কুড়াল), এড. ইলিয়াস আলী মন্ডল (কলার ছড়ি) ও গোলাম মোস্তফা (দালান) প্রর্তীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

বগুড়া-৬ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু (নৌকা), জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর (লাঙ্গল), জাকের পার্টির মোহাম্মদ ফয়সাল বিন শফিক (গোলাপ ফুল), গণফ্রন্টের আফজাল হোসেন (মাছ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের এমদাদুল হক এমদাদ (মশাল), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নজরুল ইসলাম (বটগাছ), আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম (একতারা), আব্দুল মান্নান আকন্দ (ট্রাক), সরকার বাদল (কুড়াল), মুক্তিযোদ্ধা মাছুদার রহমান হেলাল (আপেল), রাকিব হাসান (কুমির)।

বগুড়া জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে গুরুত্ব বিবেচনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণ পুলিশ সদস্য ছাড়াও এপিবিএন, আনসার ভিডিপিসহ অন্যান্য নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্ব পালন করেন। ভোট কেন্দ্রের বাইরে ও নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশের স্ট্রাকিং ফোর্স, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা টহল দিয়েছেন। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর