শিরোনাম
৪ মার্চ, ২০২৩ ১৮:৫৫

দরপত্র চুরির অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানের নামে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

দরপত্র চুরির অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানের নামে মামলা

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে হাট-বাজারের দরপত্র কৌশলে চুরি করে নেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানকে আসামি করা হয়।

শুক্রবার মধ্যরাতে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী মোজাহাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।

জানা যায়, এবছর শাজাহানপুর উপজেলার মোট ২২টি হাট বাজারের অনুকূলে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইজারা দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ছিল দরপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় এবং বিকেল ৩টার সময় দরপত্র খোলার সময় নির্ধারণ করা ছিল। যথা সময়ে উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে ইজারা কমিটির উপস্থিতিতে দরপত্রের বাক্স খোলা হয়। দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ৪টায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান উপজেলার জামাদারপুকুর হাটের একটি দরপত্র কৌশলে চুরি করে নিয়ে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জিয়াউল হক জুয়েলের হাতে দেন।

জিয়াউল হক জুয়েল ওই দরপত্র নিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন। এমন ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং দ্রুত অডিটোরিয়াম থেকে বের হয়ে পড়েন। এ নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, গণমাধ্যমকর্মী ও উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে প্রায় ৩০ মিনিট পর ওই দরপত্র আবারো ফেরত দেওয়া হয়।

শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোট ২২টি হাট বাজারের মধ্যে নারিল্যা হাট ছাড়া বাকি ২১টি হাট-বাজারের অনুকূলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ১১৬টি, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে ৩টি, শাজাহানপুর থানা থেকে ৭টি, জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ৬০টি এবং সোনালী ব্যাংক বগুড়া সেনানিবাস শাখা থেকে ২টিসহ মোট ১৮৮টি দরপত্র বিক্রি হয়। ২১টি হাট-বাজারের মধ্যে ১৭টি হাটের অনুকূলে দরপত্র জমা পড়ে ৩১টি।

বাকি নারিল্যা, মাঝিড়া, শাহনগর, খাদাস ও রূপিহার এই পাঁচটি হাটের কোনো দরপত্র জমা পড়েনি। অপরদিকে ১৭টি হাটের মধ্যে দাঁড়িগাছা, বীরগ্রাম, আড়িয়াবাজার, কামারপাড়া, খরণা, দুবলাগাড়ী, জামুন্না, টেংরামাগুর, ডোমনপুকুর ও নয়মাইল এই ১০টি হাটের অনুকূলে মাত্র ১টি করে দরপত্র জমা পড়ে। এছাড়া জামাদারপুকুর হাটের অনুকূলে ২টি দরপত্র জমা হয়েছিল। একটি খরনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান শাহীনের নামে। অপরটি কাহালু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাসিবুল হাসান সুরুজের নামে।

শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদা খানম জানান, উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে বাক্স খোলার পর দরপত্রগুলোর তালিকা করা হচ্ছিল। এসময় মাঝিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান চোখ ফাঁকি দিয়ে জামাদারপুকুর হাটের একটি দরপত্র চুরি করে নিয়ে যান। তার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের ধারণ করা ভিডিও থেকে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান আধাঘণ্টা পর ওই দরপত্র ফেরত দেন। কিন্তু নিশ্চিত হতে পারছি না এটা সেই দরপত্র কি না। এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জামাদারপুকুর হাটের অনুকূলে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হবে।

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, সরকারি অফিসের গোপন নথি সরানো ও প্রতারণার মাধ্যমে চুরি করে নেওয়ার অভিযোগে সিকিউরিটি অ্যাক্ট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এজাহারের পূর্ণ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামানকে আসামি করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর