২১ এপ্রিল, ২০২৩ ১৫:৪৪

শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় যা যা থাকছে

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় যা যা থাকছে

ঈদ জামাত নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে

ঈদ জামাতের জন্য এখন প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। এ ঈদগাহে কয়েক লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও ঈদ জামাত নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে ঈদের দিন শোলাকিয়ায় হামলার পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা।

এবারও নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে শোলাকিয়া। এমনটিই জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও র‌্যাবের কর্মকর্তারা দফায় দফায় পরিদর্শন করেছেন শোলাকিয়া ময়দান। ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে শোলাকিয়া ময়দানকে। ঈদের দিন শোলাকিয়ায় বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করা হবে।

স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শোলাকিয়ায় এবার ১৬১ জন সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যসহ মোট ১২৯৯ জন পুলিশ, র‌্যাবের ৮টি টিম (প্রতি টিমে ছয়জন করে) ও ১০০ বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। পুরো মাঠ পর্যবেক্ষণের জন্য বসানো হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। ঈদের দিন মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে থাকবে ১৩টি আর্চওয়ে। বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। থাকবে ড্রোন ক্যামেরাও। এছাড়া আনসার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন। ঢাকা থেকে আসবে বোম ডিসপোজাল টিম। ঈদের দিন এখানে ফায়ার সার্ভিস কাজ করবে। ছয়টি অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম থাকবে। দায়িত্ব পালন করবেন ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার স্বার্থে ঈদের দিন মুসল্লিদের শুধুমাত্র জায়নামাজ নিয়ে মাঠে আসার অনুরোধ করেছেন।

বুধবার র‌্যাব-১৪ ময়মনসিংহের অধিনায়ক মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান ও কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পৃথকভাবে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন করেন। তারা জানান, এবার হামলার কোনো আশঙ্কা নেই। এরপরও ২০১৬ সালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঈদগাহ ময়দানকে লক্ষ্য করে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মুসল্লিদের নিরাপত্তা এবং ঈদ জামাত সুন্দর ও নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বদ্ধপরিকর বলেও জানান তারা।

ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, ঈদ জামাত আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। লাখ লাখ মুসল্লির নিরাপত্তা ও ঈদ জামাত নির্বিঘ্ন করতে যা যা করার সবই করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, দূরের মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ঈদের দিন দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে সকাল পৌনে ছয়টায় ময়মনসিংহ থেকে একটি ট্রেন এবং ভৈরব থেকে সকাল ছয়টায় একটি ট্রেন কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। ঈদ জামাত শেষে দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ স্টেশন ছেড়ে যাবে দুটি ট্রেন।

এবার এ ঈদগাহের জন্য ১৯৬তম ঈদুল ফিতরের জামাত। সকাল ১০টায় শুরু হবে ঈদ জামাত। ইমামতি করবেন শোলাকিয়া ঈদগাহের নিয়মিত ইমাম ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

প্রসঙ্গত, ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ভয়াবহ হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, স্থানীয় এক নারী এবং এক হামলাকারীসহ চারজন নিহত হন। হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। কিন্তু এরপরও ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ ময়দানের ঈদ জামাতে মুসল্লিদের সমাগমে এতটুকু ভাটা পড়েনি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর