জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেছেন, করোনার সময় শ্রমিকদের পাশে ছিল শেখ হাসিনা সরকার। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত শুধু তামাশা করেছে। বাস-ট্রেনে আগুন দিয়ে শ্রমিকদের হত্যা করেছে।
মহান মে দিবস উপলক্ষে সোমবার দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসন ও আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধু সর্বপ্রথম শ্রমিকদের কল্যাণ, ন্যায্য অধিকার ও মজুরি নিশ্চিত করেছেন, শ্রমিকদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুই সর্বপ্রথম ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন। আজকে সাংবাদিকরা নানা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন তাও বঙ্গবন্ধুর কারণে। তিনিই প্রথম সাংবাদিকদের কল্যাণে ‘সংবাদপত্র কর্মচারী আইন’ প্রণয়ন করেন ১৯৭৪ সালে। বঙ্গবন্ধু শ্রমিকদের কল্যাণে বাংলাদেশে প্রথম মজুরি কমিশন ও শ্রম উপদেষ্টা বোর্ড গঠন করেন। তিনি বলেন, শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও কল্যাণে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রেনিং সেন্টার, টেক্সটাইল কলেজ, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, সমবায় ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও বিভিন্ন বীমা প্রতিষ্ঠা করেছেন।হুইপ আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর শ্রমিক, অসহায়, দরিদ্রসহ সকল মানুষদের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেছেন। করোনার সময় বন্ধ থাকা কল-কারখানার শ্রমিকদের বেতন ভাতা প্রদানের জন্য ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছেন। শ্রমিকরা আজ তাদের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছেন। আর এগুলো সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্য।
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তাদের অগ্নি-সন্ত্রাসের কারণে রাজপথে অনেক শ্রমিককে জীবন দিতে হয়েছে। অমানবিকভাবে অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে শ্রমিক হত্যায় লিপ্ত ছিল তারা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শ্রমিক বান্ধব সরকার। শ্রমিকদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতায় করে তাদের পাশে ছিল শেখ হাসিনা সরকার। তাই শ্রমিকরা আজ শান্তিতে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এই অদম্য অগ্রযাত্রায় দেশের শ্রমজীবী মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগ জড়িয়ে আছে। হুইপ ইকবালুর রহিম মহান মে দিবসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রমিক এবং মালিক পরস্পর সুসম্পর্ক বজায় রেখে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বপ্ন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার আহ্বান জানান।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) দেবাশীষ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মমিনুল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা, আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহা. আবুল বাশার, কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহা পরিদর্শক মো. মাহফুজুর রহমান ভুইয়া, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদ সরকার, দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি রেজা হুমায়ুন ফারুক চৌধুরী, দিনাজপুর মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী, জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক আমজাদ আলী আহমেদ, জাতীয় শ্রমিক লীগ দিনাজপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দীন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীম আলম সরকার বাবু, দিনাজপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলহাজ ওয়াহেদুল আলম আর্টিষ্ট, দিনাজপুর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহির শাহ, দিনাজপুর জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সাদাকাতুল বারী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ফুলবাড়ী টেকনিক্যাল কলেজের প্রভাষক মো. হারুন উর রশিদ।
এর আগে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় শ্রমিক লীগ দিনাজপুর জেলা শাখার আয়োজনে ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র্যালি ও শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এবারের মে দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল