১২ জুলাই, ২০২৩ ১৯:০৫

আখাউড়ায় বিদ্যালয়ের সামনে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে পাঠদান ব্যাহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

আখাউড়ায় বিদ্যালয়ের সামনে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে পাঠদান ব্যাহত

বিদ্যালয়ের সামনে ময়লার ভাগাড়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্রে রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কের পাশে আখাউড়া পৌরসভার ময়লার ভাগাড়। বছরের পর বছর ধরে রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে রেলওয়ে ভূমিতে পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। গুরুত্বপূর্ণ আখাউড়া-চান্দুরা আঞ্চলিক সড়কের উত্তর পাশে ময়লার ভাগাড় থাকায় রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুর্গন্ধের কারণে নাক চাপা দিয়ে পথ চলতে হয় ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষকে।

ভাগাড়ের ময়লার উৎকট দুর্গন্ধে শ্রেণিকক্ষে বসে থাকতে পারছে না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। এ দুর্বিষহ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রায় দেড় মাস আগে আখাউড়া পৌরসভার মেয়রের নিকট চিঠি দিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন। অবগত করেছেন ইউএনও এবং শিক্ষা অফিসারকেও। কিন্তু প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ না থাকায় এ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলছে না কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।

এদিকে দুর্গন্ধে ক্লাসে বসে থাকতে অসুবিধা হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের দরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ দিন সব ক্লাস শেষ না করেই বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌরশহরের অন্তত ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এছাড়া আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন এবং আজমপুর রেলওয়ে স্টেশন হয়ে প্রতিদিন কয়েকশত ট্রেন যাত্রী এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। তাছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য, বাজার সদায়সহ বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। ময়লার ভাগাড়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধে নাক চাপা দিয়ে যেতে হয়। দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হ। মরার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে হরিজন কলোনির পোষা শুকর দিনভর ময়লা-আবর্জনায় বিচরণ করায় উৎকট দুর্গন্ধ আরও তীব্র হয়ে ওঠে।   

রেলওয়ে স্কুলের কয়েকজনের শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয়। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্কুলের সামনে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে দুর্গন্ধে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। ক্লাসে বসে থাকতে অসুবিধা হয়। অতিরিক্ত দুর্গন্ধের কারণে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দেওয়ার জন্য হেড স্যারের কাছে দরখাস্ত দিয়েছি।

রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রশিদ বলেন, আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনেক সমস্যার মধ্যে আছি। প্রতিদিনই কেউ না কেউ অসুস্থ হচ্ছে। আমরা পড়ালেখার জন্য নিরাপদ পরিবেশ চাই।

মাহমুদুল হাসান সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্রে স্কুলের সামনে রাস্তার পাশে ময়লার দুর্গন্ধে মানুষের কষ্ট চরম পর্যায়ে চলে গেছে।

সড়ক বাজারের একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মাসুদ রানা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, ময়লার ভাগাড়ের সামনে আসলে নাকে চাপা দিয়ে রাখি তারপরও মনে হয় দম বন্ধ হয়ে আসে। এগুলো আমাদের পরিবেশ খারাপ করছে। দ্রুত এগুলো অপসারণ করার দাবি জানান তিনি।

আখাউড়া রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান খান বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে ছাত্রছাত্রীরা শ্রেণিকক্ষে বসে থাকতে পারে না। দুর্গন্ধে ক্লাস করতে অসুবিধা হয়। ছাত্রছাত্রীরা ২-৩টি ক্লাসের পর বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার আবেদন করে। এজন্য ৩ দিন স্কুল ছুটি দিতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এসএসসি পরীক্ষার আগে পৌরসভার মেয়রকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করেছিলাম। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং শিক্ষা অফিসারকেও বিষয়টি অবগত করেছি। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ দেখছি না।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বলেন, এটা পৌরসভার দায়িত্ব। আমি পৌর মেয়রের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি।

আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ময়লা ফেলার জন্য আমরা জায়গা খুঁজছি। জায়গা না পাওয়া পর্যন্ত এখানেই বর্জ্য ফেলা হবে। 

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর