২০ জুলাই, ২০২৩ ১৫:৪৭

জাদুঘরে কাঙাল হরিনাথের সেই ছাপাখানা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

জাদুঘরে কাঙাল হরিনাথের সেই ছাপাখানা

গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ১৯০তম জন্মবার্ষিকী আজ (২০ জুলাই)। এ উপলক্ষে তার ব্যবহৃত ও দেশের প্রথম ঐতিহাসিক এম এন ছাপাখানাটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কাঙাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ছাপাখানাটি ফিতা কেটে ও ঢাকনার কাপড় সরিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ।

জাদুঘরের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ওবাইদুল্লাহ'র সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাঙ হরিনাথের চতুর্থ বংশধরের স্ত্রী শ্রীমতী গীতা মজুমদার।

গত শনিবার বেলা ১১ টায় ঢাকা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের নব নির্মিত বোর্ড সভা কক্ষে গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ঐতিহাসিক সেই এমএন প্রেসটি বাস্তুভিটা থেকে জাদুঘরে হস্তান্তরের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিনামা স্বাক্ষর করা হয়। ২০ লাখ টাকার চেক ও দুইজনের চাকুরির বিনিময়ে ছাপাখানাটি হস্তান্তর চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন কাঙাল হরিনাথের চতুর্থ বংশধরের স্ত্রী শ্রীমতি গীতা মজুমদার ও জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান।

চুক্তিনামা সম্পাদনের তিন দিন পরে গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের ব্যবহৃত ঐতিহাসিক এম এন ছাপাখানাটি কয়েকটি খণ্ড খণ্ড আকারে গত মঙ্গলবার জাদুঘর নিয়ে যাওয়া হয়।

উল্লেখ্য, সাংবাদিক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার বাংলায় ১৩০৩ ( ১৮৩৩ ইং) সনের ৫ ই শ্রাবণ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কুণ্ডুপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের সাধারণ মানুষের উন্নতির জন্য এবং তাদের শোষণ-পীড়নের বিরুদ্ধে হরিনাথ সারাজীবন আন্দোলন করেছেন। অত্যাচারিত এবং অসহায় কৃষক সম্প্রদায়কে রক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি সাংবাদিকতা পেশা গ্রহণ করেন। প্রথমে তিনি সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় লিখতেন। পরে ১৮৬৩ সালে তিনি নিজেই ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। পত্রিকাটি পরে পাক্ষিক ও শেষে এক পয়সা মূল্যের সাপ্তাহিকে পরিণত হয়। এতে সাহিত্য, দর্শন ও বিজ্ঞানবিষয়ক প্রবন্ধ প্রকাশিত হলেও কৃষকদের প্রতি তখনকার নীলকর ও জমিদারদের শোষণ-অত্যাচারের কথা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হতো।

হরিনাথের জীবনে কখনো স্বচ্ছলতা ছিল না, কিন্তু তা সত্ত্বেও পত্রিকা প্রকাশের সুবিধার্থে তিনি ১৮৭৩ সালে একটি ছাপাখানা স্থাপন করেন। রাজশাহীর রানী স্বর্ণকুমারী দেবীর অর্থানুকূল্যে দীর্ঘ ১৮ বছর পত্রিকা প্রকাশের পর আর্থিক কারণে এবং সরকারের মুদ্রণ শাসনব্যবস্থার কারণে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। 


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর