২০ জুলাই, ২০২৩ ২১:৩১

পাবনায় ধর্ষককে জরিমানা

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনায় ধর্ষককে জরিমানা

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গ্রাম্য সালিশে মাসুদ হোসেন (২১) নামে এক ধর্ষককে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বেতুয়ান পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মাসুদ ওই গ্রামের গোলাম নবীর উদ্দিনের ছেলে ও বিবি স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। 

সূত্র জানায়, মাসুদ হোসেন কলেজে আসা যাওয়ার পথে একই এলাকার  চালাপাড়া গ্রামের এক স্কুলছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে বিয়ের প্রলোভনে প্রেমের সম্পর্ক করেন। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে অভিযুক্ত মাসুদ একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেন। পরে মাসুদকে ওই মেয়ে বিবাহের জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু মাসুদ নানান তালবাহানা করতে থাকে এবং মেয়েকে এড়িয়ে যান। এ অবস্থায় গত ১৪ জুলাই বেলা ১১টার দিকে ওই মেয়ে নিজেই মাসুদ এর বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়। সেখানে মাসুদ এর বাড়িতে পরপর তিন দিন অবস্থান করে বিবাহের দাবি নিয়ে অনশন করতে থাকে। ওই মেয়েটির অনশনের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে। কিন্তু ওই মেয়ে মাসুদের বাড়িতে ওঠার পরপর কৌশলে মাসুদ গা ঢাকা দেন। এদিকে মাসুদকে তিন দিন বাড়িতে না পেয়ে ওই মেয়ের পরিবার থানায় মামলা করার উদ্যোগ নিলেও ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি সদস্যদ্বয় মিলে মামলা না করতে নিষেধ করেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার দাবি করে। 

এ ঘটনায় দিলপাশার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের নেতৃত্বে স্থানীয় ইউপি সদস্য আক্কাস আলী ও আরজু খান এবং সাবেক ইউপি সদস্য আঃ হান্নান এর উপস্থিতিতে অভিযুক্ত মাসুদকে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। ৬৫ হাজার জরিমানা আদায় করা হলেও ভুক্তভোগী পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। এরপর ইউপি সদস্য আক্কাস আলী ও আরজু খান মিলে মেয়েকে তার বাবার বাড়িতে রেখে আসেন।
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলে, আমরা অসহায়, তাই আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না, জোরপূর্বক টাকা রেখে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলে গেছে। 

এ বিষয়ে দিলপাশার ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্কাস আলী জানান, বিষয়টি নিয়ে একটা মীমাংসা হয়েছে। তবে তিনি ইউপি চোয়ারম্যান আব্দুল হান্নান এর সাথে কথা বলেন বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। 
এ বিষয়ে ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরজু খান জানান, সমস্যা একটা হয়েছিল যার সমাধান হয়েছে। তবে কি সমাধান হয়েছে তা তিনি বলেননি। তবে তিনিও ইউপি চোয়ারম্যান আব্দুল হান্নান এর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে জানতে দিলপাশার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি জানান, ছেলে মেয়ের বিষয়ে একটা সমাধান হয়েছে এবং সাক্ষাতে বিস্তারিত জানানো হবে বলে তিনিও মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
 এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর