২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৯:২৭

লাখো পর্যটকে মুখর কক্সবাজার সৈকত

কক্সবাজার প্রতিনিধি

লাখো পর্যটকে মুখর কক্সবাজার সৈকত

পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভালে মেতেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।

বিশ্ব পর্যটন দিবসকে কেন্দ্র করে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভালে মেতেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এ আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে দেশের শীর্ষস্থানিয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। কার্নিভালের সাথে সরকারি টানা তিনদিনের ছুটি যুক্ত হওয়ায় প্রায় ২ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। হোটেল-মোটেলগুলোর ৯০ শতাংশের বেশি কক্ষ বুকিং রয়েছে। সমুদ্র সৈকত ও মেলা প্রাঙ্গনের পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখর।

সাগরতীর জুড়ে শুধু পর্যটক আর পর্যটক। নোনাজলে সব বয়সের মানুষ মেতেছে আনন্দ আর উল্লাসে। সেই সঙ্গে প্রিয় মুহূর্তগুলো পার করছেন প্রিয়জনের সঙ্গে। অন্যদিকে, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্বপালন করছেন লাইফগার্ড কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সরজমিনে দেখা যায়, সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টেরে প্রবেশদ্বার সেজেছে রঙিন ছাতায়। সৈকতের প্রবেশের শুরুতেই মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা। রঙিন ছাতার নিচে তুলছেন ছবি। আর একটু সামনে যেতেই সৈকতের বালিয়াড়িতে দৌড়াচ্ছে ঘোড়া। এসব ঘোড়ার পিঠে চড়ে ঘুরছেন ভ্রমণপিপাসুরা। আবার ঘোড়ার পিঠে উঠে ছবি তুলছেন শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ। একই সঙ্গে বিচবাইকে করে ঘুরছেন বালিয়াড়ির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। তবে টানা ছুটিতে সবচেয়ে বেশি উল্লাস সাগরের নোনাজলে। মেতেছে সমুদ্রস্নান আর জেডস্কিতে চড়ে। ভ্রমণপিপাসুরা বলছেন, প্রশান্তির খোঁজে সাগরে ছুটে আসা।

ঢাকার মিরপুর থেকে মা-বাবার সঙ্গ বেড়াতে ৯ বছরের শিশু কাশফিয়া বলেন, স্কুল ছুটি তাই মা-বাবার সঙ্গে কক্সবাজার সৈকতে এসেছি। খুব মজা হচ্ছে। বালুচরে খেলতে খুব ভাল লাগছে। আরেক পর্যটক আরিয়ানা বলেন, কক্সবাজারে ছুটি কাটাতে এসেছি। কক্সবাজারে খুব সুন্দর সৈকত আছে, বালিয়াড়িতে ঘোড়া আছে। নোনাজলে গোসল করেছি। অনেক মজা হচ্ছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী শিহাব করিম বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর পর দেশে এসেছি। এখন পরিবার নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছি। এখানে সৈকতে ঘুরাঘুরির পাশাপাশি পর্যটন মেলা হচ্ছে, পরিবার নিয়ে খুব আনন্দ করছি। বিশেষ করে সৈকতের প্রবেশদ্বারে রঙিন ছাতাগুলোতে ছবি তুলে খুবই ভাল লেগেছে। দিনাজপুর থেকে আসা পর্যটক আকরাম হোসেন বলেন, চাকরি জীবনে খুবই কম ছুটি পাওয়া হয়। এবার টানা ৩ দিনের ছুটিতে একটু প্রশান্তি খোঁজে কক্সবাজার ছুটে আসি।

এদিকে সাগরে বিরাজ করছে বৈরী আবহাওয়া। ঢেউয়ের মাত্রাও বেড়েছে। তাই সবকটি পয়েন্টে টাঙানো হয়েছে লাল পতাকা। তবে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে লাইফ গার্ড সংস্থা। সি সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ শুক্কুর বলেন, টানা ছুটি ও পর্যটন মেলাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার সৈকতে এখন লাখো পর্যটক। তাদের অধিকাংশই কিন্তু সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত। এখন তাদের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে হিমহিশ খেতে হচ্ছে। এরপরও পর্যটকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, চেষ্টা করছি পর্যটকদের সর্বচ্চো নিরাপত্তা দেয়ার।

আর ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে, চারদিকে নিরাপত্তার বলয় তৈরি করা হয়েছে। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক আয়ুব আলী বলেন, সমুদ্রসৈকতের বালিয়াড়ি থেকে শুরু করে প্রতিটি পয়েন্ট, হোটেল মোটেল জোন ও পর্যটন স্পটগুলোতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এসব স্থানে সাদা পোশাকের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে।  আশা করি পর্যটকরা নিরাপদে কক্সবাজার ভ্রমণ করছেন। 

প্রসঙ্গত, টানা ৩ দিনের ছুটিতে কক্সবাজারের ৫ শতাধিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজ পর্যটকে ভরপুর। 
আর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল শুরু করায় প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনেও পর্যটকরা ভ্রমণ করছেন।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর