২৭ অক্টোবর, ২০২৩ ০৪:৪৬

ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষে আনসার সদস্যকে খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষে আনসার সদস্যকে খুন

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী

বগুড়ায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষে আনসার সদস্য আশা দেবীকে খুন করা হয়েছে। তার পরকীয়া প্রেমিক নয়ন ইসলাম শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করেন। তাদের দুজনের মধ্যে দীর্ঘদিন পরকীয়ার সম্পর্ক চলছিল। সম্প্রতি তিনমাস আগে নয়নের অন্যত্র বিয়ে হওয়ায় সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

এর আগে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শিবগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নয়নকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি ওই উপজেলার বানাইল পশ্চিমপাড়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। গ্রেফতারের পর নয়ন হত্যার দায় স্বীকার করে বুধবার বিকেলে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, প্রায় নয় মাস আগে প্রতিবেশী নয়নের সাথে আশা দেবীর পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্বামী মুদি ব্যবসায়ী হওয়ায় দিনের বেশিরভাগ সময় আশা বাড়িতে একা থাকতেন। সম্পর্কের একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় অন্তরঙ্গ মুহূর্ত তৈরি হয়। এর মাঝে গত তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে নয়নের অন্যত্র বিয়ে হয়। তখন থেকেই আশা দেবী নয়নের সাথে সবরকম সম্পর্ক ও মেলামেশা বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। আশার সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্কের বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেনি নয়ন।

পুলিশ সুপার বলেন, দুর্গাপূজার নবমীর রাতে মানুষের আনাগোনা বেশি হওয়ায় আশাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নয়ন। গত ২৩ অক্টোবর রাতে দায়িত্ব পালন শেষে পোশাক পরিবর্তন করার জন্য আশা দেবী মন্দির থেকে বাড়িতে যান। এসময় তিনি নয়নকে দেখতে পেয়ে বাড়ির মূল ফটক বন্ধ করে দেন। ওই সময় আশা দেবীর বাড়িতে কেউ ছিল না। সবাই পূজা মণ্ডপে ছিলেন। সুযোগ বুঝে নয়ন বাড়ির পেছনের ইটের প্রাচীর টপকে আশা দেবীর শয়ন কক্ষে প্রবেশ করেন। এসময় আশা দেবী তার পরিহিত আনসার ভিডিপি’র পোশাক পরিবর্তন করছিলেন। হঠাৎ নয়নকে দেখতে পেয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে বিভিন্ন ভাবে ফুসলিয়ে আশা দেবীর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে লিপ্ত হয় নয়ন। ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষেই শোয়ার খাটের পাশে থাকা মোবাইল চার্জারের ক্যাবল মুখের মধ্যে দিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে আশা দেবীকে হত্যা করে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার, আব্দুর রশিদ, সহকারী পুলিশ সুপার তানভীর ইসলাম, শিবগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি আব্দুর রউফ ও মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আশিক ইকবাল।

উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর দুর্গাপূজা চলাকালে নবমীর রাতে স্বামীর বাড়ি থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য আশা দেবীর (৩১) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি বানাইল উত্তরপাড়া গ্রামের ভোজন মোহন্তের স্ত্রী। আশা দেবী ওই গ্রামের সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর