১২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:৫৭

বরিশালে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ দিপাবলী উৎসব, পুণ্যার্থীদের মিলনমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ দিপাবলী উৎসব, পুণ্যার্থীদের মিলনমেলা

বরিশাল নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশানে ভারত উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শ্মশানে দিপাবলী অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিপাবলী ঘিরে উৎসবের আমেজ ছিল পুণ্যার্থীদের মাঝে। দূরদূরান্ত থেকে পূঁজারীরা সমাধীতে গিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, গীতা পাঠ আর পছন্দের খাবার সাঁজিয়ে রেখে স্মরণ করেন প্রয়াতদের। স্মরণানুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের স্বজনদের মিলনমেলায় পরিণত হয় দিপাবলী। এ উপলক্ষ্যে প্রায় ৬ একর আয়তনের কাউনিয়া মহাশ্মশান সাঁজানো হয় নবরূপে। উৎসব নির্বিঘ্ন এবং শান্তিপূর্ণ করতে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। 

বরিশাল মহাশ্মশান ঘিরে দিপাবলী উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রায় ২০০ বছর ধরে। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত, পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা বিপ্লবী দেবেন ঘোষ এবং মনোরমা বসু, মাসিমাসহ বহু খ্যাতিমান ব্যক্তির প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার সমাধি রয়েছে এখানে। প্রতিবছর কালিপূঁজার আগেরদিন ভূত চতুর্দ্দশীর  পুণ্যার্থীতে হিন্দুধর্মালম্বীরা তাদের প্রয়াত স্বজনদের সমাধিতে দ্বীপ জ্বেলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

শনিবার সন্ধ্যার পর মহাশ্মশান পুণ্যার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়। তারা প্রয়াত স্বজনের সমাধীতে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে, গীতা পাঠ করে এবং পছন্দের খাবার সাঁজিয়ে রেখে প্রার্থনা করেন। শ্মশানে দীর্ঘদিন পর পুরনো স্বজন-বন্ধুদের পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকে। 

এবার দিপাবলী উপলক্ষ্যে মহাশ্মশানের মধ্যে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত্বের একটি ম্যুরাল উন্মোচন করেছে মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি। দিপাবলী উপলক্ষ্যে সেখানে আয়োজন করা হয় মেলার। বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জি কুডু বলেন, বরিশাল মহাশ্মশানে এবারও দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার পূণ্যার্থী এসেছে প্রিয়জনের সমাধিতে দ্বীপ জ্বালাতে। তাদের আত্মার শান্তি কামনায় পছন্দের খাবার সাঁজিয়ে রাখেন প্রিয়জনরা। করেন গীতা পাঠ। দেশী-বিদেশি হাজারও মানুষের সমাগম হওয়ায় বরিশালের দিপাবলী উৎসব পরিণত হয় মিলনমেলায়। 

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউনিয়া জোনের সহকারী কমিশনার মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, বরিশাল মহাশ্মশানের দিপাবলী উৎসবে লাখো মানুষের সমাগম হয়। এটি পৃথিবীর সর্ববৃহত দিপাবলী উৎসব। এই উৎসব নির্বিঘ্ন এবং শান্তিপূর্ণ করতে পোষাকে এবং সাদা পোষাকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত উৎসব চলবে ততক্ষণ পর্যন্ত মহাশ্মশানের নিরাপত্তা দিবে পুলিশ।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর