২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:২০

প্রচণ্ড শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে রায়পুরে মেঘনার চরাঞ্চলে

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

প্রচণ্ড শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে রায়পুরে মেঘনার চরাঞ্চলে

বিগত কয়েকদিন ধরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীবেষ্টিত চরাঞ্চল ও বেড়িবাঁধের দুই পাশের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকছে এসব এলাকার রস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও ফসলি মাঠ। শীতের কারণে স্বাভাবিক জীবন-যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে এই এলাকার মানুষের। শীতবৃদ্ধির ফলে বিশেষত. শিশু ও বয়স্ক নারী পুরুষ দের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে নানারকম শীতজনিত রোগ। শীতের কারণে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে সর্দি, কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে। 

অন্যদিকে শীত কাবু করে ফেলছে বয়স্ক নারী ও পুরুষদেরকে। তাদের মাঝেও বাড়ছে সর্দি, শ্বাসকষ্ট ও শরীর ব্যথাসহ নানা ধরনের রোগবালাই। আবার শীতবৃদ্ধির ফলে গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন খামার মালিকরা। শীতের আগমনে গবাদিপশুর মাঝেও বাড়ছে নানারকম রোগের প্রকোপ। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে- সন্ধ্যার পর পরই শীতের কারণে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে স্থানীয় ৩৫টি হাট-বাজার। সড়কে কমে যাচ্ছে যানবাহন ও জন সাধারণের চলাচল। এদিকে পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে চরম কষ্ট পাচ্ছেন চরাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারগুলো।

জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে রাত ৮টার পর থেকেই ঘণ কুয়াশা পড়তে শুরু করে নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলে। কুয়াশার প্রকোপ থাকে সকাল ৯-১০টা পর্যন্ত। ভোরের দিকে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে আঞ্চলিক ও স্থানীয় সড়কগুলো। ফলে সকালের দিকে তুলনামূলক যান চলাচল কম থাকছে সড়কগুলোতে।

এদিকে উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের হাট-বাজারে ভোরের দিকে ঠাণ্ডা ও কুয়াশার কারণে ক্রেতাদের উপস্থিতি থাকে না বললেই চলে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য।  

মেঘনা নদী সংলগ্ন চরকাচিয়া আশ্রয়কেন্দ্রের দিনমজুর হানিফ আলী ও আরব মিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে নদীর পাড়ে অনেক শীত পড়ছে। ঠাণ্ডার কারণে সকাল এবং বিকেলে কৃষি কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। প্রচণ্ড শীতে দেখা দিয়েছে রোগ বালাই। ইজিবাইক চালক জুলহাস ও মোঃ হোসেন বলেন, কুয়াশার কারণে সকালে রাস্তায় কিছুই দেখা যায় না। ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে হয়। তারপরও অনেক সময় ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে এলে নানা রকম দুর্ঘটনা ঘটে। 

রায়পুর উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে সরকারিভাবে এ পর্যন্ত উপজেলায় সাড়ে চার হাজারের মতো কম্বল এসেছে। তবে সেগুলো এখনো ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়নি। অচিরেই শীতবস্ত্রগুলো ইউনিয়ন ভিত্তিক চেয়ারম্যানদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। 

এদিকে উপজেলায় সরকারিভাবে বিতরনণ শুরু না হলেও ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শীতার্তদেরকে শীতবস্ত্র দেওয়া হচ্ছে যদিও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। উপজেলার চর কাচিয়া, জালিয়ার চর, চরলক্ষ্মী, চরপক্ষ্মী, চর ইন্দুরিয়া, চর পাঙ্গাসিয়া, চর পাগলা, চর মোহনা, চর আবাবিল, চরবংশী, মোল্লারহাট, মিয়ারহাট, চারঘাসিয়া, খাসেরহাট, বেড়িবাঁধ সড়কের ফিশারিঘাট, হায়দরগন্জ, নতুনব্রীজ, বটতলি, আখনবাজার সহ বিভিন্ন স্থানে দানশীল ব্যক্তি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।

রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কমল দে জানান, ভোরে মহাসড়কে প্রচুর কুয়াশা থাকে। ভোরে যানবাহন কম চলাচলের পাশাপাশি হেড লাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলে। হাইওয়ের একাধিক স্থানে আমাদের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা বিনতে আমিন বলেন, সরকারিভাবে সাড়ে চার হাজার কম্বল এসেছে এ উপজেলায়। সহসাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের মধ্যে এই শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর