২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৯:২০

হ্যাকাররা গিলে খাচ্ছে সখীপুরের বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধীর ভাতা

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

হ্যাকাররা গিলে খাচ্ছে সখীপুরের বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধীর ভাতা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী কার্ডের ভাতা গিলে খাচ্ছে হ্যাকাররা। ইতোমধ্যে তিন শতাধিক কার্ডধারী ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছে উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়।

কার্ডধারী একাধিক ভুক্তভোগীর পরিবার জানিয়েছে, নিজেকে সমাজসেবা অফিসের লোক পরিচয় দিয়ে এবং ভাতার টাকা দ্বিগুণ করার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের হিসাব নম্বরের গোপন পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয় হ্যাকাররা। এক সাপ্তাহের মধ্যে ৪১টি কার্ডের একাউন্ট খোলা মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করার আবেদন করা হয়েছে বলে জানান পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর পারুল আক্তার।  

সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, ভাতা জমা হওয়ার কয়েকদিন আগে থেকে কার্ডধারীর মোবাইল ফোনে এক ধরনের ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) নম্বর পাঠায় হ্যাকাররা। এই পিন নম্বর চাওয়ার কথা বলে হিসাব নম্বরের পাসওয়ার্ড চায়। প্রথমেই হ্যাকাররা আমাদের অফিসের পরিচয় দেয় তারপর ভাতার টাকা বেশি পাইয়ে দিবে বলে প্রলোভন দেখায়। তারপরেও পাসওয়ার্ড না দিলে ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার ভয় দেখায় বলে একাধিক কার্ডধারীর অভিযোগ। 

অসচেতনতার কারণেই সহজ-সরল মানুষগুলো হ্যাকারের খপ্পরে পড়ে বলে জানায় উপজেলা সমাজ সেবা অফিস।

পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের শারিয়াত নামের এক প্রতিবন্ধীর অভিভাবক বলেন, এক লোক ফোন করে বলল, আপনার নম্বরে একটি পিন নম্বর গেছে, নম্বরটি বলেন। না বললে আগামী মাসে কোনো টাকা জমা হবে না। ভয় পেয়ে পিন নম্বরের স্থলে পাসওয়ার্ড বলে দিছি তারপর দেখি মোবাইলে জমা থাকা পাঁচ হাজার টাকার কোনো হদিস নেই। সেই নম্বরে ফোন দিলাম কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই নম্বর বন্ধ।

পৌরসভার রামখা এলাকার বয়স্ক ভাতার কার্ডধারী ইলিমজান ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘এক টাউট উপজেলা অফিসের পরিচয় দিয়ে বলল, আপনার ভাতা কার্ডে সমস্যা হয়েছে। তাই মোবাইলের পিন নম্বর অথবা পাসওয়ার্ড দিন। বিশ্বাস করে পাসওয়ার্ড দিলাম, তারপর দেখি আমার মোবাইলে বয়স্ক ভাতার ১৮শ টাকা নেই।’
 
কাউন্সিলর পারুল আক্তার বলেন, ‘হিসেব খোলা মোবাইল নম্বর হ্যাক করে ভাতার টাকা নেওয়া একটি চক্র সখীপুরের অনেক মানুষের ক্ষতি করছে। এক সাপ্তাহের মধ্যে পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৪১টি ভাতা কার্ডের মোবাইল নম্বর পরিবর্তনের আবেদেন দিয়ে আসছি। অন্যদের সচেতন করে দিচ্ছি। তারপরেও মানুষ হ্যাকারের খপ্পরে পড়েই যাচ্ছে।’

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মনসুর আহমেদ বলেন, ‘মোবাইল হ্যাক করে ভাতার টাকা নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে প্রত্যেক এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। উপজেলার প্রতি মাসের সমন্বয় সভায় সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও মানুষ মোবাইলের পাসওয়ার্ড বলে দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর