১০ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৭:২০

অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গে দর-কষাকষিতে প্রাণ গেল নবজাতকের

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

অ্যাম্বুলেন্স চালকের সঙ্গে দর-কষাকষিতে প্রাণ গেল নবজাতকের

নেত্রকোনার দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার্ড করা নবজাতককে ময়মনসিংহ নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা গেছে। দিনমজুর বাবার অভিযোগ, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে চালকের সাথে দর-কষাকষি করে সময়ক্ষেপণের পর দেখেন তার নবজাতক আর বেঁচে নেই। এমন ঘটনায় বিচার দাবি করেন তিনি।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্বিতীয় সন্তান জন্ম দেন সুমাইয়া আক্তার। নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রসব হওয়ায় নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করে প্রিম্যাচিউর লিখে উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতককে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা। পরে রাত ১০টায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক শাহাদাত হোসেনকে ফোন দিয়ে যোগাযোগ করে নবজাকের পরিবার। সরকার নির্ধারিত ভাড়া ১২৫০ টাকা থাকলেও চালক ২৫০০ টাকা দাবি করায় রাত ১২টা পর্যন্ত চলে ভাড়া নিয়ে দর-কষাকষি। পরে ১৭০০ টাকায় নবজাতক নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি হলেও ততক্ষণে নবজাতকটি আর বেঁচে নেই।

ভুক্তভোগীদের স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে প্রসব ব্যথা নিয়ে কলমাকান্দার নাজিরপুর ইউনিয়নের দিলোরা গ্রামের দিনমজুর মনির মিয়া তার স্ত্রী সুমাইয়াকে পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে সন্ধ্যা ৬টায় নরমাল ডেলিভারি হয়। এরপর থেকেই শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যা দেখা দেয় নবজাতকের। এ কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহে রেফার্ড করেন।

পরে দিনমজুর মনির মিয়া ধার করে টাকা জোগাড়ের পর রাত ১০টায় অ্যাম্বুলেন্স চালককে ফোন দিয়ে সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে দর-কষাকষিতে দুই ঘণ্টা অতিবাহিত হয়ে যায়। এর মধ্যে জন্ম নেওয়া নবজাতকও মারা যায়।

এদিকে, স্থানীয় সূত্র জানায়, অ্যাম্বুলেন্স চালক শাহাদাত হোসেন হাসপাতালের ব্যক্তিগত জিপ গাড়ির চালক হয়েও প্রায় দু’বছর ধরে একাধারে জিপ ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগে প্রতিনিয়ত তার ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বিভিন্নজনের।

দর-কষাকষির কথা স্বীকার করে অ্যাম্বুলেন্স চালক শাহাদাত হোসেন জানান, তিনি জিপ গাড়ির চালক। তারপরও অ্যাম্বুলেন্স চালান।

নবজাতক মৃত্যুর বিষয়টি দুঃখজনক উল্লেখ করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মোছাম্মৎ জেবুন্নেসা বলেন, ময়মনসিংহে রেফার্ড করার পরও তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে নিয়ে যায়নি। তবে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

চালকের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর