সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেছেন, আমাদের বিচার ব্যবস্থা এতো নাজুক হয়ে গেছে যে, কোনো অপরাধ সংগঠিত হলে সেটার যে একটা বিচারিক প্রক্রিয়া আছে সেই বিচারিক প্রক্রিয়ায় কোনো স্বচ্ছতা নেই। কারণ এটা প্রথম শুরু করে পুলিশ। আর এই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। তার মধ্যে হয়তো সম্মানিত অনেক ব্যতিক্রম আছেন যারা চেষ্টা করেন বিচারটা এনে দেওয়ার। কিন্তু মূলত দেখা গেছে যে, যেখান থেকে শুরু হয় সেখানে মামলার হেরফের করা হয়। যে ধারায় মামলা হওয়া উচিৎ ছিল সে ধারায় মামলা হয় না।
তিনি আরও বলেন, মামলায় ডাক্তারি পরীক্ষার যে ব্যাপার থাকে সেখানে আমরা সঠিক রিপোর্টটা পাই না। তারপর সাক্ষী আসার ব্যাপার থাকে। সাক্ষীকে নিয়ে আদালতে উপস্থিত করার দায় দায়িত্ব কার সেটা বুঝা যায় না। পুলিশকে যদি সাক্ষী হতে হয়, তখন পুলিশ অন্য থানায় থাকলে সেই থানা থেকে আরেক থানায় আসবে এইটার কোনো খরচ বহন রাষ্ট্র করে না। ইত্যাদি নানা কারণে বিচারিক যে প্রক্রিয়া সে প্রক্রিয়াটা সুষ্ঠু ভাবে পালন করা হয় না। এবং যারা বিচার ব্যবস্থার দায়িত্বে আছেন তাদের অনেকে ভালোও আছেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের যে অভিযোগ সেটা হলো আসলে কোনো ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দৃষ্টান্ত আমরা স্থাপন করতে পারি না বলে মানুষের বিচার ব্যবস্থার উপরেও আস্থা কমে গেছে। যাদের উপরে অপরাধ সংগঠিত হয় তারাও এটা নিয়ে নড়চড় করে না।
সুলতানা কামাল বলেন, যারা এসব বিষয় গুলো সমাধান দেওয়ার বা সুরাহা দেওয়ার দায়িত্বে থাকেন তারাও তাদের দায়িত্ব গুলো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ওভাবে পালন করেন না। ব্যক্তিগত ভাবে হয়তো কেউ কেউ করেন। যার ফলে এই সমস্ত ঘটনা বেড়েই যাচ্ছে। আমাদের শত চেষ্টা স্বত্ত্বেও তা কমানো যাচ্ছে না। হয়তো কখনো কখনো সংখ্যায় কমে আসছে। কিন্তু মূলত যে বিষয়টি আমরা বলতে চাই যে ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা সেটা আমরা করতে পারছি না।মঙ্গলবার বিকালে নেত্রকোনা জেলা শহরের শিবগঞ্জ রোডের সাবলম্বী উন্নয়ন সমিতির ড্রিম সেন্টার কার্যালয়ে হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার’স নেটওয়ার্ক এর একটি মতবিনিময় সভা শেষে এসব কথা বলেন সুলতানা কামাল।
সভায় এডভোকেট সিতাংশু বিকাশ আচার্যের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আশিক নুর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সামাজিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে সভায় ওঠে আসা নানা ঘটনা নিয়ে পর্যালোচনা শেষে সুলতানা কামাল মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা নেতাকর্মীদের আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানানা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত