ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে এবার আলুর ফলন কম হওয়ার ক্ষতির শঙ্কা করছেন কৃষকরা। খেতেই আলু গাছ নষ্টের ফলে আশানুরূপ ফলন হয়নি। ছত্রাকনাশক ও বিষ প্রয়োগ করেও এ সমস্যা দমন করতে পারেনি কৃষকরা। উল্টো অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে বলে দাবি তাদের।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘এবার আলুর দাম গত বারের তুলনায় দ্বিগুণ। প্রতিকূল আবহাওয়া আর আলু বীজ রোপণের সময় বৃষ্টিপাতের ফলে খেতের বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। সার-বীজ, কীটনাশক ও শ্রমিকের দাম বেশি থাকায় কৃষকরা আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে। এবার নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে আলু বীজ রোপণ করায় আলুর আকারও ছোট হয়েছে।’
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘যেসব কৃষকরা আগাম জাতের আলু আবাদ করেছে তারা লাভবান হয়েছে। পরবর্তীতে যারা বীজ রোপণ করেছে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার ফলে আলু গাছগুলো তেমন বড় হতে পারেনি। ফলনের আগ মুহূর্তে গাছগুলো মারা গেছে।’
গতকাল বুধবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খেত থেকে নতুন আলু তুলছেন কৃষকরা। আলুর আকার অনেক ছোট। ফলন নেই বললেই চলে। গাছগুলো বড় হওয়ার আগেই ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতের ফলে খেতেই মারা গেছে আলু গাছ। এতে করে কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে।
কথা হয় কয়ড়া গ্রামের কৃষক সাইফুল মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ‘আশা নিয়ে ১২শতক জমিতে আলুর বীজ রোপণ করেছিলাম। গাছগুলোও ভালো হয়েছিল। যখন আলুর ফলন হবে তখন শীত আর কুয়াশা আলু গাছ মারা যায়। কয়েকবার ওষুধ ছিটিয়েও কাজ হয়নি। ফলে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছি। একই কথা বলেন, ‘কৃষক আয়নাল হক, জসিম উদ্দিন, কবির হোসেন ও আ. হাই।’
মুশুদ্দি এলাকার কৃষক সুজন মিয়া বলেন, ‘৯ বিঘা জমিতে আলু আবাদ করে ছিলাম। পরিচর্যার কোনো কমতি ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে ৪ বিঘা জমিতে মড়ক দেখা দেয়। কৃষি বিভাগের পরামর্শে কীটনাশক ছিটিয়েও লাভ হয়নি। এবার আলু বর্তমান বাজার ভালো। সামনে আলুর দাম আরও বাড়বে।’ একই এলাকার কৃষক আয়নাল হক বলেন, ‘যারা আগাম জাতের আলু আবাদ করেছে তাঁরা লাভবান হয়েছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘এ অঞ্চলটি মূলত কৃষি প্রধান। এখানে সকল ধরণের শাক-সবজি উৎপাদন হয়। কৃষকদের আলু আবাদের আমরা উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। কৃষকরা যেন আলু চাষে ক্ষতির মুখে না পড়ে এজন্য তাদের নানা পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল