ফরিদপুরে সাবেক স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী মোঃ আলমগীর হোসেনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিনমাস কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় ঘোষণা করেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত ব্যক্তির নাম আলমগীর হোসেন (৩৪)। তিনি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্দি উপজেলার খড়িবনা গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, আলমগীর হোসেনের সাথে ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর ফরিদপুরের সদরপুরের বিশ্বাসডাঙ্গী গ্রামের কালাম মোল্লার মেয়ে রিতা আক্তারের বিয়ে হয়। এ দম্পতির ঘরে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে পারিবারিক কলহের কারণে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এর চারমাস পর সদরপুরের খালাশিডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজালারের সাথে রিতার দ্বিতীয় বিবাহ হয়।
দ্বিতীয় বিয়ের পর রিতা তার স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে চরভদ্রাসন সদরের বিএস ডাঙ্গী গ্রামে ইউসুফ বাছারের বাসায় ভাড়া থাকতেন। তবে দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে বাজারে যাওয়া আসার পথে রিতাকে নানাভাবে উত্যক্ত করতো সাবেক স্বামী। এক পর্যায়ে রিতাকে পুনরায় বিয়ের প্রস্তাব দেন আলমগীর। রিতা এ প্রস্তাব প্রত্যখ্যান করে। এক পর্যায়ে আলমগীর রিতাকে হত্যার হুমকি দেয়। ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে ছেলেকে নিয়ে বাজারে যান রিতা। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাড়া বাসায় ফেরার পথে চরভদ্রাসন সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা তার সাবেক স্বামী আলমগীর রিতার পেটে চাকু মারে। ছেলের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে আলমগীর পালিয়ে যান। পরে এলাকাবাসী রিতাকে উদ্ধার করে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরদিন ১০ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে রিতা।
এ ঘটনায় রিতার দ্বিতীয় স্বামী মো. শাহজালাল বাদী ১০ এপ্রিল রাতে চরভদ্রাসন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ