ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মুরাদ আহমেদ মৃধা নামে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর সইতে না পেরে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে না ফেরার দেশে চলে গেছেন চাচাতো বড় বোন দোলেনা বেগম। তাদের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায়।
মঙ্গলবার ভোরে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বোনের মৃত্যু হয়। এর আগে, সোমবার সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়।
মুরাদ আহমেদ মৃধা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং সম্প্রতি স্নাতক পাস করে সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার খাটাসখৈল গ্রামের আব্দুস সাত্তার মৃধার ছেলে।পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুরাদ নিজ বাড়িতে আসেন। আসার পরই মুরাদ জ্বরে আক্রান্ত হন। পরিবারের লোকজন স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি পরীক্ষা করাতে দেন। পরে পরীক্ষায় তার শরীরে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। কয়েক দিন চিকিৎসার পরও সুস্থ না হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে লিভার ও কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে মুরাদের। এরপর পরিবারের লোকজন তাকে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ডাক্তাররা ডায়ালাইসিস করতে বললে তাকে আবার রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডায়ালাইসিসে নেওয়া হলে অবস্থার অবনতি হলে সোমবার সন্ধ্যায় মুরাদের মৃত্যু হয়।
মুরাদের মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রামে পৌঁছালে পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনে চাচাতো বোন দোলেনা বেগম (৫০) হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে তাকে নাটোর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার ভোরে তিনিও মারা যান।
মুরাদের বাবা আবদুস সাত্তার মৃধা বলেন, অন্যের খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তিনি গুড় বানিয়ে বিক্রি করেন। গুড় বিক্রির টাকায় কোনোমতে সংসার চলে। বাড়িঘর করতে পারেননি। আয়ের টাকা দিয়ে দুই ছেলেকে পড়ালেখা করিয়েছেন। বড় ছেলে গত বছর স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। ছোট ছেলে মুরাদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এক মাস আগে স্নাতক শেষ করেছেন। সোমবার তার মৃত্যুর খবর শুনে মুরাদের চাচাতো বোন হৃদরোগে আক্রান্ত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনিও মারা যান।
বিডি প্রতিদিন/এমআই