লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ অগ্রণী স্কুলের ক্যাম্পাস থেকে চুরি হওয়া ৯ মাস বসয়ী শিশু মালিহা ইসলাম ওহিকে চার দিন পর পাওয়া গেছে। রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রামগতি-কমলনগরের সড়কের পাশে উপকূল কলেজ সংলগ্ন মিয়াপাড়া এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে শিশুটিকে রাতেই তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।
এদিকে চুরির সাথে জড়িত নারীকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। এর আগে শিশু চুরির ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও উদ্ধারের দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন করেছে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী। তাকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা চালায়। অবশেষে চার দিন পর শিশুটি উদ্ধার হয়ে তার মায়ের কোলে ফিরেছে।
শিশুর মা মরিয়ম বেগম বলেন, চারদিন পর আমার মেয়ে আমার কোলে ফিরেছে। আমার বুকটা ভরে গেছে। চুরির সাথে যে নারী জড়িত, তাকে যেন গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়। আমি তার বিচার দাবি করছি।পুলিশ জানায়, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে থানার নিকট উপকূল কলেজের পিছনে মাটির রাস্তা দিয়ে জনৈক পথচারী ইউছুপ বাড়ি যাওয়ার সময় কম্বল মোড়ানো একটি শিশুটি দেখতে পায়। তিনি চিৎকার দিয়ে লোকজন জড়ো করে। পরে এলাকার লোকজন থানায় খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং তার পরিচয় নিশ্চিত করে। এর আগে শিশুর মা থানায় একটি জিডি করে। সে সূত্রে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রাখে।
ঘটনার বিবরণে শিশুর মা মরিয়ম বেগম জানান, চুরি হওয়া ওহির বড় বোন সাবিহা ইসলাম মিহি (৬) অগ্রণী রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের নার্সারী শ্রেণির ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে মিহি 'যেমন খুশি তেমন সাজো' অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। এতে মালিহা নিয়ে তার মা মরিয়মও বিদ্যালয়ে যায়। মিহিকে সাজানোর জন্য চুলের ক্লিপ ও বেল্ট আনার জন্য বিদ্যালয়ের পাশেই বাজারে যান মা মরিয়ম। এসময় মায়া নামে ওই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর কাছে মালিহাকে রেখে দেন।
এরমধ্যেই মায়ার কোল থেকে অচেনা এক নারী মালিহাকে নিয়ে যায়। সুযোগ বুঝে সেখান থেকে শিশুটিকে নিয়ে সটকে পড়েন ওই নারী। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ঘটনাস্থল এসে বিদ্যালয়ের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা যাচাই করে দেখতে পায় মাথায় লাল হিজাব, মুখে মাস্ক ও কালো বোরকা পরিহিত এক নারী শিশুটিকে কোলে নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। বাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা যাচাই করেও একই দৃশ্য দেখা গেছে।
কমলনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল জলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম