২ মার্চ, ২০২৪ ১৬:৪৮

টুকটুকে শিমুলে যেন লালশাড়ি পড়েছে দিনাজপুর-বীরগঞ্জ মহাসড়ক

দিনাজপুর প্রতিনিধি

টুকটুকে শিমুলে যেন লালশাড়ি পড়েছে দিনাজপুর-বীরগঞ্জ মহাসড়ক

কালের বিবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর যেখানে সেখানে চোখে পড়ে না রক্ত লাল শিমুল গাছ। সেই মূল্যবান শিমুল গাছ এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। 

তবে এখনও দিনাজপুর-বীরগঞ্জ মহাসড়কের ২৮ কিলোমিটার রাস্তার দুই ধারে শোভা বাড়িয়ে আছে লাল টুকটুকে শিমুলের বন। এই মহাসড়কের বিভিন্ন গাছের ফাঁকে ফাঁকে শতাধিক শিমুল গাছ রয়েছে। শুধু ফুল আর ফুল, পাতা নেই, ফুটন্ত এ ফুল দৃৃষ্টি কাড়ে নেয় সবার। পাখিরা উড়ে এসে বসছে লাল শিমুলের ডগায়। ঝড়ে পড়া শিমুলের লাল গালিচার রূপ দেখা যায় শিমুলতলায়। মোহনীয় রূপে প্রকৃতিকে রাঙিয়েছে শিমুল। যা পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের দৃষ্টি কাড়ছে।

ফাগুনের শেষে বসন্তের আবহে গাছে গাছে পরিপক্ব শিমুল ফুল। কাকডাকা ভোরে রাস্তায় ঝরে পড়া ফুলগুলো দেখে মনে অন্যরকম অনুভূতি জাগে। মনে হয় যেন রক্তিম পথ। শিমুল ফুল না ফুটলে যেন বসন্ত আসে না। বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিবেশের সঙ্গে সংস্কৃতি চর্চারও একটি যোগ সূত্র রয়েছে। গাছে গাছে ফুটন্ত এই শিমুলের লাল রঙ যেন চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এরপর এই রক্ত লাল থেকে সাদা ধূসর হয়ে তৈরি হয় তুলা। শিমুলের তুলার রয়েছে আলাদা কদর। কিন্তু এখন বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তুলা তৈরি ও ফোম ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলা ব্যবহার অনেকটা কমে গেছে। 

স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন জানান, ওই মহাসড়কে এই এই শিমুল ফুলের লাল রঙ দৃষ্টিনন্দন করেছে রাস্তার দুই পাশের প্রকৃতিকে। গ্রাম বাংলায় এই শিমুল গাছ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত। একসময় মানুষ এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ,তোষক, বালিশ। ছোট শিমুল গাছের মাটির নিচের অংশ মূলের উপকারিতা অনেক। ভেষজ চিকিৎসা কাজে এই গাছের রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। গ্রামাঞ্চলের মানুষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে শিমুলের রস ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে গাছের মূলকে ব্যবহার করতো।

বিরল উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার শাহজাহান আলী জানান, শিমুল ফুল শুধু সৌন্দর্য বর্ধনই করে না। শিমুল গাছের রয়েছে নানা উপকারিতা। শিমুল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে, এমন নজিরও আছে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে শিমুল গাছ। শিমুল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরিকৃত ফার্নিচার বেশি স্থায়ীত্ব হয় না। এছাড়া বিভিন্ন ফোমের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলা ব্যবহার কমে গেছে। ফলে শিমুল গাছ হারিয়ে যাওয়ার পথে।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর