শরীয়তপুরের জাজিরাতে নজুমদ্দিন বেপারিকান্দি গ্রামে নুরুল ইসলাম রহমান সূর্যমুখী চাষ করে লাভের মুখ দেখবেন এমনটা আশা করছেন। নুরুল ইসলাম ইউটিউব দেখে শখের বশে শুরু করেছেন সূর্যমুখী ফুলের চাষ। ২০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী বীজ রোপণ করেন। ঝড়ের কারণে কিছুটা ক্ষতি হলেও লাভের আশা করছেন তিনি। আর কয়েকদিন পরই বীজ সংগ্রহ করবেন। প্রথমবারের মত সূর্যমুখী ফুল চাষ করেন তিনি।
নুরুল ইসলাম বলেন, সরকার যদি আর্থিক সহযোগিতা করে তা হলে সূর্যমুখী ফুল আগামী বছর আরও বেশি জমিতে চাষ করবো।
এদিকে তার চাষ করা হলুদ সূর্যমুখী ফুল দেখতে ভিড় করছেন ফুলপ্রেমীরা। এমন চিত্রের দেখা মিলছে জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের নজিমুদ্দিন বেপারি কান্দীর গ্রামে।শাহাজাদী সুলতানা বলেন, তিন দিকে বড়ো আবাদি জমি। পাশে সূর্যমুখী বাগান। সারি সারি লাগানো ফুলগাছ। অনেক দর্শনার্থী দূর থেকে এসেছেন ছবি তুলতে আমিও এসেছি। কেউ সেলফি তুলতে ব্যস্ত, কেউ ব্যস্ত ফেসবুক আইডিতে ছবি পোস্ট করতে। আতিকুর রহমান পিতুল নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ‘সূর্যমুখী ফুল দেখতে আমি দুদিন এসেছি। খুব ভালো লাগছে প্রতিদিন ছবি তুলতে। অনেকেই আসেন দূর-দূরান্ত থেকে আমিও এসেছি।’
জানা গেছে, সূর্যমুখী বীজের তেল স্বাস্থ্যকর। অন্যান্য তেলবীজে যেসব ক্ষতিকারক উপাদান থাকে, সূর্যমুখীতে তা নেই। এতে আরও অনেক উপকারি উপাদান ও পুষ্টিগুণ রয়েছে। এক মণ বীজে ১৮ কেজি তেল পাওয়া যায়। তেল ছাড়াও খৈল দিয়ে মাছের খাবার তৈরি হয়। গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এ অঞ্চলে আমার আগে কেউ চাষ করেনি। বিক্রির ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হবে। তবে বিক্রি করতে না পারলে নিজেরা তেল বানিয়ে ফেলব।
জাজিরা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বলেন, এ বছর জাজিরাতে নুরুল ইসলাম রহমানই সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছেন। আমাদের পক্ষ থেকে পরামর্শ দিয়েছি। আমাদের কাছে আসলে আমরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেব। সূর্যমুখী ফুলের বীজ বিক্রির জন্যও সহায়তা করব। সূর্যমুখী চাষে ভাল মুনাফার সম্ভাবনাও দেখছেন তারা। ৯০-১১০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তোলা যায়। বাজারে দাম ভাল থাকায় লাভজনক ফসল হয়ে উঠেছে সূর্যমুখী। আর ক’দিন পরেই কৃষকরা এই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
সূর্যমুখীর বীজে লিনোলিক এসিড ও উন্নতমানের তৈল থাকে। হৃদরোগীদের জন্য সূর্যমুখীর তেল খুবই উপকারী। এ ছাড়াও সূর্যমুখীর তেলের রয়েছে নানামুখী ওষুধি গুণ। সূর্যমুখীর খৈল গরু ও মহিষের উৎকৃষ্টমানের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সূর্যমুখীর গাছ ও পুষ্পস্তবক জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। সূর্যমুখী সাধারণত সব মাটিতেই চাষ করা যায়। তবে দো-আঁশ মাটি সূর্যমুখী চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল