৫ মার্চ, ২০২৪ ১৬:০৩

হত্যার পর লাশ পুঁতে মুক্তিপণ দাবি করেন মামাতো ভাই ও চাচা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

হত্যার পর লাশ পুঁতে মুক্তিপণ দাবি করেন মামাতো ভাই ও চাচা

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে স্কুলছাত্র নাসিরুল ইসলাম নাসিমকে (১৪) হত্যার পর মুক্তিপণ দাবি করেন তারই সম্পর্কের মামাতো ভাই এনামুল হক ও চাচা ফিরোজ ইসলাম। নিহত স্কুলছাত্র নাসিরুল ইসলাম নাসিম সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার ওয়াজেল মন্ডলের ছেলে। সে সে ফুলবাড়ী গমির উদ্দিন বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্র।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আব্দুর রশিদ।  

গত সোমবার রাত ১০ টার দিকে গাবতলি উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের ঈশ্বরপুর গ্রামের নিহতের মামাতো ভাইয়ের গোয়ালঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-গাবতলীর ঈশ্বরপুর পূর্বপাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে এনামুল হক (২০) ও সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি পশ্চিমপাড়ার আব্দুল জলিল মন্ডলের ছেলে ফিরোজ ইসলাম (১৯)। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে নিহত স্কুলছাত্র নাসিমের ব্যবহৃত বাটন মোবাইল ফোন, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা একটি রশি, ১টি সেলাই করা সিমেন্টের বস্তা ও মাটি খোঁড়ার কাজে ব্যবহৃত একটি লোহার কোদাল উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ জানান, নিহত স্কুলছাত্র নাসিম আসামি এনামুল হকের সম্পর্কে মামাতো ভাই ও ফিরোজ ইসলাম সম্পর্কে চাচা। তারা একসাথে বন্ধুর মত চলাফেরা করতো। কয়েকদিন আগে সিগারেট খাওয়া নিয়ে নাসিমের সাথে এনামুল ও ফিরোজের বাকবিতণ্ড হয়। এরপর নিহত নাসিমকে শায়েস্তা করতে আসামিরা পরিকল্পনা করতে থাকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পবিত্র শব-ই-বরাতের রাতে ঘুরতে যাওয়ার নাম করে কৌশলে ডেকে নেয় নাসিমকে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলার গাবতলীর ঈশ্বরপুর গ্রামে আসামি এনামুলের বাড়ির পাশে নাসিমের হাত-পা বাঁধার চেষ্টাকালে সে চিৎকার শুরু করে। এসময় আসামিরা তার গলা হাত-পা ও মুখ চেপে ধরলে শ্বাসরোধে নাসিম মৃত্যুবরণ করে। একপর্যায়ে নাসিমের লাশ এনামুলের বসত বাড়ির গোয়াল ঘরের মধ্যে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে সিমেন্টের বস্তায় ভরে।এরপর গর্ত করে মাটির নিচে পুঁতে রাখে।

তিনি আরও জানান, ঘটনার কয়েকদিন পরে আসামিরা নাসিমের বাবার নিকট থেকে মুক্তিপণ বাবদ ৮০ হাজার টাকা দাবি করে। 

এদিকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নিহতের বাবা সারিয়াকান্দি থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তারপর থেকে পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ মাঠে নামে। অভিযানে গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গাবতলী উপজেলার ঈশ্বরপুর গ্রামে আসামি এনামুলের বাড়ি থেকে মাটিতে পুঁতে রাখা নাসিমের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রেস ব্রিফিং উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মোতাহার হোসেন, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরাফত ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তানভীর, সহকারী পুলিশ সুপার নিয়াজ মেহেদী, সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম প্রমুখ। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর