ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ’র নোয়াখালীর নাবিক আনোয়ারুল হক রাজু (২৭) ও ছালেহ আহমদের (৪৩) পরিবারে নেই ঈদের আমেজ। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে তাদের পরিবারে হচ্ছে না কোনো ধরনের কেনাকাটা। নেই ভালো কিছু রান্নার প্রস্তুতিও।
দুই অপহৃত নাবিকদের স্বজনদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। একই সাথে তারা বয়ে বেড়াচ্ছে শঙ্কা ও প্রতীক্ষা। পরিবারের উপার্জনশীল প্রিয় ব্যক্তিদের এমন ঘটনায় যেন মহাসাগরে তলিয়ে গেছে তাদের এবারের ঈদ আনন্দ।
জলদস্যুদের হাতে জিম্মি রাজু নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রামপুর গ্রামের আজিজুল হক মাস্টারের ছেলে। অপর জিম্মি ছালেহ আহমদ চাটখিল উপজেলার সিংবাহুড়া গ্রামের মৃত সাখায়াত উল্যার ছেলে। তিনি জাহাজটিতে ফাইটার পদে কর্মরত।
রাজুর মা দৌলত আরা বেগম বলেন, আমরা খুবই কষ্টে দিন অতিবাহিত করছি। প্রধানমন্ত্রী ঈদের আগেই যেনো আমার ছেলেসহ জিম্মি সবাইকে ছাড়িয়ে আনে। ছেলে ছাড়া আমাদের কোনো ঈদ আনন্দ নেই।
রাজুর বড় বোন কামরুন নাহার রুমি বলেন, ‘বাড়িতে নতুন ঘরের কাজ চলছে রাজুর বিয়েকে উপলক্ষ করে। ছেলের স্মৃতিচারণ করে এখন বাবা-মা শোকে মূহ্যমান। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পালা করে চলছে শোকের মাতম।’
অপরদিকে, স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে চাটখিলের ছালেহ আহমদের ছোট পরিবার। তিনিই পরিবারের এক মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ছালেহ আহমদ গত বছর ঈদ করেছেন কর্মস্থলে। স্ত্রী ও তিন কন্যার আশা ছিল এবার তাদের সঙ্গে ঈদ করবে। কিন্তু স্বামী জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার খবরে এলামেলো হয়ে যায় তাদের পরিবার। তিন মেয়েকে নিয়ে অনেকটা বাকরুদ্ধ ছালেহর স্ত্রী তানিয়া আক্তার। যেনো তারা বেঁচে থেকেও মৃত। তানিয়া ছোটো ছোটো তিন মেয়েকে নিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে শঙ্কা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছে স্বামীর। একেবারে নিকট আত্মীয় ছাড়া কারো সাথে কথা বলছে না।
স্থানীয়রা বলেন, অপহৃত নাবিকদের ভাগ্যে কি ঘটেছে সেই শঙ্কায় ঈদের আনন্দ নেই জিম্মি নাবিকদের পরিবারে। তবে সবার প্রত্যাশা এমন উৎকণ্ঠার সময় পেরিয়ে ফিরে আসুক তাদের স্বজন।
ছালেহ আহমদের স্ত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, ‘এখন নিজেরা নিজেদের স্বান্তনা দিতে চেষ্টা করছি এই ভেবে যে এখনো সময় আছে স্বামী ফিরবে। সরকার ২৩ জনকে নাবিককে ঈদের আগে ফিরিয়ে আনবে এমন প্রত্যাশা করেন তিনি। সকল নাবিক ফিরে আসুক এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসী ও স্বজনদের।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল