১২ এপ্রিল, ২০২৪ ১১:৫৫

সদরঘাটে লঞ্চ দুর্ঘটনা: মায়ের সঙ্গে ঈদ করা হলো না বিল্লালের

পিরোজপুর প্রতিনিধি

সদরঘাটে লঞ্চ দুর্ঘটনা: মায়ের সঙ্গে ঈদ করা হলো না বিল্লালের

ঈদের দিন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্ব স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে রওনা দিয়েও গ্রামের বাড়িতে আর ফেরা হলো না। গতকাল সদরঘাট লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার কর্মী বিল্লাল হোসেনের পরিবার। 

ঈদের সময় ছুটি পেলেই বিল্লাল প্রতিবার ঈদ করতে ছুটে যান মায়ের কাছে। এবারও চেয়েছিলেন ঈদের দিন মায়ের হাতের রান্না করা সেমাই মুখে দিয়ে গ্রামের ঈদগাহ ময়দানে সবার সঙ্গে নামাজ আদায় করবেন। তবে স্ত্রী মুক্তা বেগম ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ঈদের আগে বাড়িতে যাননি। ঈদের দিন যাত্রীর চাপ কম থাকবে বলে এদিন বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু কে জানতো এই যাত্রায় কি লেখা আছে তাদের কপালে।

রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে নিহতদের মধ্যে ৩ জন একই পরিবারের সদস্য । তারা হলেন-  আব্দুল খালেক মুন্সির ছেলে ছেলে মো. বেলাল (২৮), মুক্তা (২২) ও তাদের চার বছরের শিশু মাইশা। তাদের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৪নং দাউদখালী ইউনিয়নের খায়ের ঘটিচোরা গ্রামে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে সদরঘাট লঞ্চঘাটের ১১ নম্বর পল্টুনের সামনে এ দুর্ঘটনা হয়। 

ঈদের দিন বাড়ি ফেরার জন্য চার বছরের শিশু সায়মা তার বাবা বিল্লাল এবং মা মুক্তার সঙ্গে ভোলার চরফ্যাশনগামী এমভি তাসরিফ লঞ্চে উঠতে চেয়েছিল। তবে অন্য একটি লঞ্চের ধাক্কায় শিশুটি বাবা-মায়ের সঙ্গে অনন্তকালের পথে পাড়ি জমিয়েছে।

জানা গেছে, সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ নামের দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামের আরেকটি লঞ্চ পন্টুনে ঘাটে নোঙ্গর করার সময় এমভি তাশরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়। এসময় লঞ্চে ওঠার সময় পাঁচজন যাত্রী গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসক সবাইকে মৃত ঘোষণা করেন।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল কাইয়ূম জানান, তাদের পারিবারিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণে আমরা উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। ইতিমধ্যে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। যাতে সার্বক্ষণিক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর