কুমিল্লা অঞ্চলে ভাতের চিকন চালের অভাব মিটাবে বিনা ধান-২৫। এটি বাজারের কথিত মিনিকেট চাউলের প্রতারণা ঠেকাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করছেন বিনার (বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট) কর্মকর্তারা। এক বছরে কুমিল্লা অঞ্চলে এর আবাদ বেড়েছে ১২গুণ। কুমিল্লা অঞ্চলে গত বছর ৯০ হেক্টর জমিতে বিনা ধান ২৫ চাষ করা হয়। এবার তা বেড়ে প্রায় এক হাজার হেক্টর হয়েছে।
দেবিদ্বারের কৃষক রফিক আহমেদ, বুড়িচংয়ের কৃষক মুক্তিযোদ্ধা বশির আহমেদ ও মুরাদনগরের কৃষক বাবুল মিয়া বলেন, আমরা প্রথম বিনা ধান ২৫ চাষ করেছি। এই ধানের চাউল চিকন। ভাত খেতে সুস্বাদু। আগামীবার আরো বেশি জমিতে চাষ করবো।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিণা আক্তার, মুরাদনগর উপজেলা কৃষি অফিসার পাভেল পাপ্পু খান ও দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার বানিন রায় বলেন, কুমিল্লার মাঠে বিনা ধান- ২৫ বিপ্লব ঘটিয়েছে। এক বছরে এর আবাদ বেড়েছে কয়েকগুণ। কৃষক পর্যায়ে এর ভালো সাড়া পড়েছে।
বিনা কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফাহমিনা ইয়াসমীন বলেন,কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষ সৌখিন। তারা চিকন চাউল খেতে পছন্দ করেন। এই চাউলের ভাত দীর্ঘক্ষণ সংরক্ষণ করা যায়। ভাত থাকে ঝরঝরে। এই এলাকায় ব্রি ধান ২৮এর ব্যাপক চাষ হতো। ব্লাস্টে ওই জাতটির ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা বিনা ধান ২৫ এর দিকে ঝুঁকেছেন।
বিনা কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড.মোহাম্মদ আশিকুর রহমান বলেন, জাতটি চিকন ও উচ্চ ফলনশীল। প্রতি কেজি ধানে কৃষক ১০টাকা বেশি পাবে। ভাত সুস্বাদু ও চাউলের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মাঝে এই ধানের চাষ বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন,মিনিকেট নামে বাজারে চাউল রয়েছে। মূলত মাঠে এই নামে কোন ধান নেই। এটা মোটা চাউল কেটে বাজারে পালিশ করে ছাড়া হচ্ছে। যা প্রতারণা। বাজারের এই মিনিকেট প্রতারণা রুখবে বিনা ধান ২৫। পার্টনার এবং বিনার গবেষণা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের বীজ সহায়তা ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে জাতটি দ্রুত সম্প্রসারণ করা সম্ভব হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আইউব মাহমুদ বলেন, কুমিল্লার মাঠে বিনা ধান ২৫ ভালো সাড়া ফেলেছে। আশা করছি এটি পোলাউয়ের চাউল হিসাবেও সমাদৃত হবে।
বিনার মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, কৃষিকে লাভজনক করা না গেলে কৃষককে মাঠে ধরে রাখা যাবে না। সেক্ষেত্রে বিনা ধান-২৫ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিনা ধান -২৫ দাম তুলনামূলক ফলন বেশি,দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই কৃষকরা এই ধান চাষে ঝুঁকছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম