অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন। রবিবার দুপুর থেকে বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের স্থল ভাগ চার থেকে সাত ফুট পানিতে তলিয়ে রয়েছে। সুন্দরবনের সব থেকে উচু এলাকা বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রেও চার ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড় চলাকালে পানি আরো বাড়ার আশংকার কথা জানিয়ে করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, এই প্রজনন কেন্দ্রের কুমির, হরিণ ও বিলুপ্ত প্রজাতির বাটাগুর বাচকা কচ্ছপগুলো নিরাপদ রয়েছে। রবিবার সকালের মধ্যে সুন্দরবনে থাকা দেশি-বিদেশী সব পর্যটকদের কোস্টগার্ডের সহয়তায় লোকালয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছেছে। দুপুরে সুন্দরবনের দুর্বল অবকাঠামো থাকা ঝাপসি, আমুরবুনিয়া, কলমতেজী, নাংলি, লাউঢোব ও ধানসাগর টহল ফাঁড়ি ও অফিসের কর্মকর্তা-বনরক্ষীদের পাশ্ববর্তী বন অফিসে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে অতি প্রবল গতি নিয়ে ক্যাটাগরি এক মাত্রার ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপকূলের কাছাকাছি আসার খবরে বিকাল থেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ। জেলা কন্টোল রুমের হিসেবে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৩৫৯টি মাত্র ৫০ হাজার মানুষ সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। জীবনহানি কমাতে উপজেলা প্রশাসক ও রেডেক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবীরা লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্র নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে বাগেরহাটে দুপুর থেকেই বইতে শুরু করেছে ঝড়ো হাওয়া। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল, মোংলা, বাগেরহাট সদর ও কচুয়া উপজেলার নিম্নাঞ্চল পাঁচ থেকে ছয় ফুট পানিতে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। মোরেলগঞ্জের পানগুছি ও মোংলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে পল্টুন ডুরে যাওয়ায় সড়ক বিভাগ দুটি নদীতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। সকাল থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা। শরণখোলার বলেশ্বর নদের তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে সাউথখালী ইউনিয়নের বগী, গাবতলা, বাবলাতলা, দক্ষিণ সাউথখালী এলাকার বেড়িবাঁধের প্রায় এক কিলোমিটারের সিসি ব্লক ধসে গেছে। এর ফলে মূল বাঁধ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ওই এলাকার বাঁধের বাইরের অনেক বসতঘর ঝড়ো হাওয়ায় বিধ্বস্ত হয়েছে।